পারিজাত মোল্লাঃ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে উঠে এসএসসি সংক্রান্ত এক মামলা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে গত ২০১১ সালের টেট প্রার্থীদের ভুল ও সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নের জন্য নম্বর না দেওয়ায় স্কুল সার্ভিস কমিশনকে চরম ভর্ত্সনা করলেন বিচারপতি ।
এদিন বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের নির্দেশ, -” আগামী শুক্রবার নতুন রিপোর্ট নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হতে হবে এসএসসি চেয়ারম্যানকে”। তবে শুধু তলব জারির নির্দেশ নয়, এদিন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এসএসসি কর্তৃপক্ষ কে কটাক্ষ করে বলেন,- “আপনারা কোর্টের সঙ্গে খেলছেন । এসএসসি নিয়োগ করছে, অথচ তারাই ভুল প্রশ্ন করছে । সব পরিকল্পিত । আমার বলতে দ্বিধা নেই, এসএসসি একটা প্রজন্মের ভবিষ্যত্ নিয়ে খেলছে ।”
বিচারপতি আরও বলেন, “আপনাদের প্রতিটি পদক্ষেপ সন্দেহজনক। আপনারা ভেবেছেন কী ? জনমানসে আপনাদের আচরণে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। প্রয়োজনে সব নিয়োগ খারিজ করে দেব। আমি সব নিয়োগে সন্দেহ করছি । আমাকে বাধ্য করবেন না আরও কড়া পদক্ষেপ করতে। আপনারা ভেবেছেন কী ! আপনারা কোর্টের নির্দেশের উপরে খবরদারি করছেন ।” এদিন শুনানি পর্বে বিচারপতি মান্থার বলেন, -‘ আগেও তিনি এই মামলায় বলেছিলেন যে, নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু আজও দেখা যাচ্ছে যে সেই একই পথে হাঁটছে স্কুল সার্ভিস কমিশন ‘।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের হলফনামা গ্রহণযোগ্য নয়। সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নে নম্বর দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। কারণ তাহলে সবাইকে দিতে হবে’ ।
তবে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল যে, মামলাকারী ৮৩ জনের পক্ষে । কিন্তু সেই নির্দেশ এসএসসি ইচ্ছে করে অগ্রাহ্য করেছে বলে দাবি করেছেন বিচারপতি।
আদালত সূত্রে প্রকাশ, ইংরেজি, চাইল্ড ডেভলপমেন্ট ও পেডাগোগি বা শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ে নম্বর বিতর্কে এই মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে কার্যত জেরবার স্কুল সার্ভিস কমিশন। শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে গ্রুপ-ডি ও গ্রুপ-সি নিয়োগের সমস্ত পর্যায়ে দুর্নীতি ধরা পড়ার পর, পুরো কমিশনের কাজকর্ম নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে স্কুল সার্ভিস কমিশনের একাধিক নিয়োগ দুর্নীতিতে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ও ইডির তদন্ত চলছে। এই পরিস্থিতিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এহেন মন্তব্য নুতন মাত্রা এনে দিল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায়।