পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে এবার সরব হলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি সোনিয়া গান্ধি। ধবংসাত্মক আখ্যা দিয়ে সোনিয়া বলেন, গরীবদের জন্য এই বাজেট নীরবে আঘাত আনতে চলেছে। সরকারি সম্পত্তি বেসরকারিকরণের মাধ্যমে তা পছন্দের ব্যক্তিগত হাতে হস্তান্তর করা হচ্ছে। যা বেকারত্বকে ডেকে আনবে। সব থেকে বেশি ভুক্তভোগী হবে তপশিলি জাতি-উপজাতিরা।
২০২৩-২৪ সালের পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে সোনিয়া বলেন, ইউপিএ শাসন কালে গরীবদের জন্য আনা সমস্ত সুদূরপ্রসারী অধিকার-ভিত্তিক আইনে আঘাত আনবে এই বাজেট। আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে সোনিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার মন্ত্রীরা ‘বিশ্বগুরু’ এবং ‘অমৃত কাল’ বলে উচ্চস্বরে চিৎকার করে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত পছন্দের ব্যবসায়ীকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ছে।
দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের খরচে তার পছন্দের ধনী বন্ধুদের উপকার করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নোটবন্দীকরণ থেকে জিএসটি ছোট ব্যবসাগুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। তিনটি কৃষি আইন আনার ব্যর্থ প্রচেষ্টাও বিপর্যয় ডেকে এনেছে। পরবর্তীকালে কৃষির প্রতি অবহেলা করা হয়েছে।
এলআইসি এবং এসবিআই-এর আদানি গ্রুপে বিনিয়োগ করা নিয়ে সোনিয়া বলেন, কোটি কোটি দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত ভারতীয়দের কষ্টার্জিত সঞ্চয়ও আজ সংকটের মুখে। দরিদ্র, মধ্যবিত্ত গ্রামীণ বা শহুরে ভারতীয়রা আজ কেন্দ্রের অবিবেচক নীতির কারণে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং আয় হ্রাসের নানাবিধ পরিণতির স্বীকার।
সোনিয়ার কথায়, স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি প্রতিটি ভারতীয়র জন্য একটি ভালো জীবন মানে তাদের শুধু মৌলিক চাহিদা মেটানো নয় বরং সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে নিজেদের ক্ষমতায়নের সমান সুযোগ করে দেওয়া।
সোনিয়া তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মনরেগা তহবিলের এক তৃতীয়াংশ কমানো হয়েছে, সর্ব শিক্ষা অভিযানের জন্য তহবিল টানা তিন বছরের জন্য আটকে আছে। স্কুলের মিড ডে মিলের তহবিল এই বছরে এক দশমাংশ কমে গিয়েছে। অপর্যাপ্ত তহবিল এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির ভয়াবহ পরিস্থিতি দেশে গরীবদের উপরে আঘাত হেনেছে।
সোনিয়া গান্ধি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যের দ্রুত অবক্ষয় আগামীদিনে দেশের অগ্রগতিকে স্তব্ধ করে দেবে। দেশবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে সোনিয়া বলেন, এখন সমমনা ভারতীয়দের কর্তব্য হল একযোগে এই সরকারের ক্ষতিকর কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে একসঙ্গে এমন পরিবর্তন গড়ে তোলা যা মানুষ দেখতে চায়।