পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘ম্যায় বানুঙ্গা আইএএস অফিসার’ অভিযানে ২০ জন পড়ুয়াকে দত্তক নিল মালেগাঁও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দত্তক নেওয়া ২০ জনের মধ্যে ৯ জন শহরের বিভিন্ন স্কুলে পড়াশোনা করছে। ২০০৬ সালে মহম্মদ কায়সার আব্দুল হক ২০০৫ সালের ইউপিএসি সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। মালেগাঁও এর প্রথম আইএএস অফিসার হয়েছিলেন এই মহম্মদ কায়সার। ঠিক তার দশ বছর পরে, ভাগ্যশ্রী দিলীপ বিসপুতে ২০১৬ সালে ইউপিএসি সিভিল সার্ভিসেস মেইনস ক্র্যাক করেন। পরে মুহাম্মদ কায়সারকে অনুসরণ করে মালেগাঁও থেকে দ্বিতীয় এবং একমাত্র মহিলা আইএএস অফিসার হন ভাগ্যশ্রী।
মালেগাঁও এডুকেশনাল ফোরাম পড়ুয়াদের স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশে একটি সংকল্পিত এবং সুপরিকল্পিত কর্মসূচি চালু করেছে। এই উদ্দেশে ফোরাম একটি প্রবেশিকা পরীক্ষা চালু করে। যেখানে ১১০০-এর বেশি পরীক্ষার্থী উপস্থিত হন। তাদের মধ্যে প্রায় ৬৮০ জন মালেগাঁও থেকে এবং বাকিরা ছিলেন ভিওয়ান্ডির। ২৯ জানুয়ারি রবিবার সরদার ক্যাম্পাসের ডঃ মনজুর হাসান আইয়ুবী প্রেক্ষাগৃহে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মালেগাঁও থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় যারা উপস্থিত হয়েছিলের তাদের মধ্যে থেকে শীর্ষ ২০ জন ছাত্রের নাম ঘোষণা করা হয়।
আগামী ৫ ফেব্রুয়ারিতেও ভিন্ডওয়ারিতে আরও একইভাবে অভিযান চালিয়ে আরও ২০ জন পড়ুয়াকে দত্তক নেওয়া হবে। ২০১৩ সালেও মালেগাঁও ‘হর ঘর সে এক সিভিল সার্ভেন্ট’ বলে প্রচার চালায়।
মালেগাঁও এডুকেশনাল ফোরামের সভাপতি ডঃ মনজুর হাসান আইয়ুবি রবিবার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা এই ২০ জন টপারের মধ্যে অন্তত ৫ জন আইএএস অফিসার তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছি। আগামী ৭/৮ বছরের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে তারা শুধুমাত্র সফলভাবে ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে তা নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আগেও একজন ভালো স্নাতকও হয়ে উঠতে পারে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনিকেত ভারতী, (এএসপি) মালেগাঁও বলেন, যদি সবাই মিলে এইভাবে প্রচেষ্টা চালানো হয় তাহলে এই পড়ুয়ারা অবশ্যই সাফল্য লাভ করবে। আমি সব সময় শিক্ষার্থী ও ফোরামের পাশে আছি।
উম্মীদ.কম -এর প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক আলিম ফয়েজী বলেন, সরকারি চাকুরির পরীক্ষা ও ইউপিএসিতে ক্র্যাক করার জন্য মুসলিম পড়ুয়াদের আরও উৎসাহিত করতে হবে। সরকারি সেক্টরে মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তা হল কেন্দ্র এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকার দ্বারা পরিচালিত ইউপিএসি এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আরও বেশি সংখ্যক ছাত্রদের উপস্থিতি। আলিম ফয়েজি বলেন, সরকারি সেক্টরে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধিই কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য পূরণ হবে না, যদি না ভবিষ্যতে যারা সিভিল সার্ভিসে যোগদান করে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও সাহসী না হয়।
আলিম ফাইজি সেই সময়ে গুজরাত পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজিপি) আরবি শ্রীকুমারের বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, দাঙ্গার সময় এসআরপিএফ ক্যাম্পের ঠিক বাইরে নরোদা পটিয়ায় ১০০ জনেরও বেশি মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছিল। ক্যাম্পের ইনচার্জ এবং সেকেন্ড ইন কমান্ড উভয়েই মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও এটি ঘটেছিল।মালেগাঁও এডুকেশনাল ফোরামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মুখতার ইউসুফ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন, রিজওয়ান রব্বানী, ফিরোজ হোসেন বাদশা, মাজ ডঃ মনজুর আইয়ুবী, মোহাম্মদ আরিফ, মোহাম্মদিয়া স্কুল মনসুরার অধ্যক্ষ, এজাজ সিদ্দিকী এবং বুশরা ম্যামও নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদ আরিফ দুলার স্যার এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মালেগাঁও গার্লস হাই স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও মালেগাঁও এডুকেশনাল ফোরামের সদস্য রুকাইয়া আনসারি।