পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আজ বিশ্ব হিজাব দিবস। আজ থেকে ১০ বছর আগে ২০১৩ সালে ১লা ফ্রেব্রুয়ারিতে বিশ্বজুড়ে এই দিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত নাজমা খান সোশ্যাল মিডিয়াতে সর্বপ্রথম হিজাব দিবস পালনের জন্য সোচ্চার হন। এর ধারাবাহিকতায় পরে মুসলিম দেশগুলোতে এই দিবসটি পালনের প্রচলন শুরু হয়। শুরু হওয়ার পরপরই হিজাব দিবস বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রথম বছরেই ৬৭টি দেশের মুসলিম মহিলা ছাড়াও খ্রিস্টান, ইহুদি, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও হিজাব দিবস পালন করেন।
যার মাধ্যমে হিজাব দিবসের শুরু তিনি একজন বাংলাদেশী মহিলা। নাম নাজমা হোসেন খান। নাজমা খান ১১ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলেন।তিনি মূলত সমস্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির মেলবন্ধন গড়ে তুলতে সব ধর্ম ও বর্ণের মহিলাদের হিজাব পরার আহ্বান জানান।
কিন্তু কেন তিনি হঠাৎ হিজাব দিবসের জন্য সোচ্চার হলেন, এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘স্কুলে আগে আমাকে বলা হতো ‘ব্যাটম্যান’ বা ‘নিনজা’। আর ৯/১১-এর পর যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতাম, তখন আমাকে ডাকা হতো ওসামা বিন লাদেন অথবা সন্ত্রাসী। এটি ছিল আমার জন্য খুবই যন্ত্রণাদায়ক।’
এছাড়া টুইন টাওয়ারের হামলার পর থেকে সবাই আমাকে কটুক্তি করতো। জঙ্গী, সন্ত্রাসী তকমা দিতে শুরু করল। মূলত এই বৈষম্যের অবসান আর মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে ২০১৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে হিজাব পরার আহ্বান জানান নাজমা।
তিনি জানান, তার বিশ্বাস ছিল, দিনটি উদযাপন হলে এই বৈষম্য কিছুটা হলেও দূর হবে। নাজমার সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই বর্তমানে বিশ্বের অন্তত ১৪০টি দেশের মহিলারা এই দিনটি উদযাপন করছেন ।
হিজাব একটি আরাবী শব্দ এর অর্থ আবৃত রাখা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা তার শরীরের সৌন্দর্য প্রকাশ করে এমন অংশকে ঢেকে রাখাকে হিজাব বলে।
বিশ্ব হিজাব দিবস অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে এ ধরনের একটি ইভেন্টের আয়োজিত হয়েছিল ২০০৪ সালের ১৭ জানুয়ারি। নাম ছিল ‘অ্যাসেম্বলি ফর প্রটেকশন অব হিজাব’।
সার্বিক আয়োজন ব্যবস্থায় ছিল দ্য মুসলিম ওইমেন সোসাইটি (এমডব্লুএস) ও মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন অব ব্রিটেন (এমএবি) দুইটি সংগঠন। এটি পরিচালনা করেন ড. আল্লামা ইউসুফ আল-কারজাভি।
বাংলাদেশের এই ইভেন্টের সমর্থনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। অ্যাসেম্বলি ফর প্রটেকশন অব হিজাব বর্তমানে সমাজসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে। এই দিক বিবেচনা করে বিভিন্ন দেশে হিজাব-সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য হিজাব মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।