পুবের কলম প্রতিবেদক: বাংলাকে ফের কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, এবার কেরোসিন তেল নিয়ে। এই রাজ্যের রেশন গ্রাহকদের জন্য যে কেরোসিন বরাদ্দ তা বন্টন নিয়েই কেন্দ্রীয় বঞ্চনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
ইতিমধ্যেই এই মর্মে নবান্ন চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রকে। তাতে রেশন গ্রাহকদের জন্য কেরোসিনের বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিও করা হয়েছে।
রাজ্য খাদ্য দফতরের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। একটা সময়ে বাংলা কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রতি ৩ মাসের জন্য ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কিলোলিটার কেরোসিন পেত। কিন্তু সেটাই এখন কমিয়ে প্রতিমাসে ২২ হাজার ৩৫৬ কিলোলিটার করে দেওয়া হয়েছে।
এই রাজ্যে এখনও বহু পরিবার আছেন যাঁদের হেঁসেলে কেরোসিনটাই মূল জ্বালানি । বরাদ্দ কমিয়ে দিতে সেইসব পরিবারগুলি এখন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। উল্লেখ্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রতি তিনমাস অন্তর কেরোসিনের বরাদ্দ ঘোষণা করে। তাতেই দেখা যাচ্ছে বাংলার জন্য চার মাসে মোট ৮৭% বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম দিকেও বাংলার ক্ষেত্রে প্রতি ৩ মাসের জন্য ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কিলোলিটার কেরোসিন তেল বরাদ্দ করত কেন্দ্র। অক্টোবরে সেই বরাদ্দে প্রথম নেমে আসে কোপ। ৮৮ হাজার লিটার বরাদ্দ করা হয় বাংলার জন্য। এরপর নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে আরও কমল সেই বরাদ্দ।২২ হাজার ৩৫৬ কিলোলিটার বরাদ্দ ধার্য করা হয়েছে।
রাজ্যের কেরোসিন তেলডিলার বলছেন এই রাজ্যে মোট ১০ কোটি রেশন গ্রাহক আছেন। তাঁদের চাহিদা মেটাতে যেখানে ৬০ হাজার লিটার কেরোসিনও অত্যন্ত কম সেখানে ।২২ হাজার ৩৫৬ কিলোলিটারে এই ১০ কোটি গ্রাহকের চাহিদা মিটবে। কেরোসিন ডিলাররাও আরও বলছেন জানুয়ারি মাসে যে মাত্রা বেঁধে দেওয়া হল তাতে রাজ্যের একজন গ্রাহকও ১০০ মিলিলিটারের বেশি কেরোসিন পাবেননা।
রাজ্যের খাদ্য দফতরের সচিব পারভেজ আমেদ সিদ্দিকির পাঠানো চিঠিতে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে বিহার, অসম বা ওড়িশার থেকেও কম কেরোসিন তেল বরাদ্দ করা হয়েছে বাংলার জন্য। এটা রাজ্যের সঙ্গে বঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই রাজ্যের বহু মানুষ এখনও কেরোসিনের ওপর নির্ভরশীল । পরিসংখ্যান বলছে গত বছরের অক্টোবর মাসে কেরোসিনের দাম বাড়ার পরেও রাজ্যে কিন্তু গ্রাহকরা ১৩ হাজার কিলোলিটার কেরোসিন ব্যবহার করেছেন।
৮০ থেকে ১০০ প্রতি লিটার দাম ঘোরাফেরা করছে কেরোসিনের। কেরোসিনের ওপর ৫% হারে জিএসটি ছাড়া আর কোন কর নেই। তাও কেন্দ্র খুশি মাফিক দাম বাড়িয়ে চলেছে। উল্লেখ্য কেরোসিন তেলের দাম বাড়া নিয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে লিখিত মন্তব্যও চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ( ৩৫৪)