পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ বিগত দুই বছরে করোনার তাণ্ডব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতির কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা তলানিতে ঠেকেছে। এই অবস্থায় বহু জনপ্রিয় সংস্থাই কর্মী ছাঁটাই করে লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে চাইছে।
জোম্যাটের পরে এবার সেই তালিকায় এল অ্যাপ নির্ভর ডেলিভারি সংস্থা সুইগি। প্রায় ৩৮০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করল এই সংশ্লিষ্ট সংস্থা। এই অবস্থায় সুইগি সিইও নিজেই জানিয়েছে, ‘পরিস্থিতি খুবই কঠিন’।
প্রসঙ্গত, সকালে ঘুম থেকে উঠেই সংস্থার সিইও-এর থেকে একটি মেল পান কর্মীরা। সিইও শ্রীহর্ষ মাজেটি শুক্রবার সকালে কর্মীদের কাছে পাঠানো ইমেলে বলেছেন, ‘আমরা একটি পুনর্গঠন অনুশীলনের অংশ হিসাবে আমাদের দলের আকার হ্রাস করার উদ্দেশে একটি খুব কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। এই প্রক্রিয়ায়, আমরা ৩৮০ জন প্রতিভাবান সুইগস্টারকে বিদায় জানাব। এটি সমস্ত বিকল্পগুলি খোঁজার পরে নেওয়া একটি অত্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার জন্য আমি আপনাদের সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি। সব দিক ভালো বিবেচনা করেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। আমি খুব দুঃখিত, যারা এই কঠিন পরিস্থিতিতে পড়লেন তাদের জন্য’।
ইমেলে আরও বলা হয়েছে যে, ‘খুব দ্রুত আমরা আমাদের মাংসের মার্কেটপ্লেস বন্ধ করে দেব। যদিও দলটি কঠিন ইনপুট দিয়ে ভালো কাজ করেছে, কিন্তু আমাদের চেষ্টা সত্ত্বেও আমরা এখানে পণ্যের বাজারকে ফিট করতে পারিনি। গ্রাহকের দৃষ্টিকোণ থেকে, আমরা এখনও মাংস ডেলিভারি করতে থাকব ইন্সটামার্টের মাধ্যমে। আমরা অন্য সব নতুন ভার্টিকালে বিনিয়োগ করতে থাকব’।
সিইও শ্রীহর্ষ মাজেটি কর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে জানিয়েছেন, ‘সংস্থাকে লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন খাতের খরচ পুনর্বিবেচনা করতে হয়েছে। এছাড়া অফিস এবং বিভিন্ন পরোক্ষ খরচ বন্ধ করতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, সুইগি আগামী ৩-৬ মাসের মধ্যে ভুক্তভোগী কর্মীদের নগদ অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে এটি তাদের মেয়াদের উপর ভিত্তি করে হবে।
গত বছর নভেম্বর মাসে জোম্যাটোতে কর্মীদের ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়। ইতিমধ্যেই ৩ শতাংশ কর্মী এই সংস্থা থেকে কাজ খুইয়েছেন। বিগত কয়েক মাসের লোকসানের কথা জানিয়েছিল জোম্যাটো। সংস্থাটি দাবি করেছিল, ২০২১ সালে সংস্থার ত্রৈমাসিক আয় যেখানে ছিল ৪.৩০ বিলিয়ন, সেটাই ২০২২-এ কমে দাঁড়িয়েছে ২.৫১ বিলিয়নে। এবার সেই একই অবস্থার মধ্যে পড়ল জনপ্রিয় ফুড ডেলিভারি অ্যাপ সুইগি।
সম্প্রতি মাইক্রোসফট বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে। সেই তালিকায় রয়েছে ট্যুইটার, মেটা, শেয়ারচ্যাট, ওলা, ফেসবুক সহ একাধিক সংস্থা। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার সময় অনলাইনে খাবার অর্ডার বেড়ে যাওয়ার কারণে বহু সংস্থাই কর্মী নিয়োগ বাড়িয়ে দেয়।
এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই, অনলাইনে খাবার অর্ডার দেওয়ার হিড়িক কমেছে। সংস্থাগুলি লোকসানের পথে হাঁটছে। এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের বেতন সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সংস্থাগুলি