পুবের কলম প্রতিবেদক: বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরতা কমাতে অস্ত্রোপচারে জেলা হাসপাতালগুলিতে জোর দিচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
সরকারি হাসপাতালে অস্থি সহ অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসায় আরও উন্নত পরিষেবা প্রদানে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থাও নিতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, সরকারি হাসপাতালে অস্থিরোগের চিকিৎসা-পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও অস্ত্রোপচারের সময়ে রোগী চলে যাচ্ছেন বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে রাশ টানতে এ বার কড়া নির্দেশিকা পদক্ষেপ নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রকল্প কার্যকরে পাইলট প্রজেক্ট হবে মুর্শিদাবাদের হাসপাতালগুলি। এই নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একটি নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে রাজ্যের সমস্ত স্তরের সরকারি হাসপাতালে অস্থিরোগের চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেই পরিকাঠামো ঠিক মতো ব্যবহার করা হচ্ছে না।
এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও বাইরে চিকিৎসার খরচ বহন করতে হচ্ছে সরকারকে। এটা তো ঠিক নয়। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, জরুরি পরিস্থিতি ও রোগী যে সমস্যা নিয়ে আসবেন, সংশ্লিষ্ট সরকারি হাসপাতালে যদি সেই চিকিৎসা-পরিকাঠামো না থাকে, তা হলেই একমাত্র বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করা যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর্তারা আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় দেখা গিয়েছে, সরকারি হাসপাতালে প্রথমে চিকিৎসা হলেও, অস্ত্রোপচারের আগে রোগী ভর্তি হয়েছেন স্থানীয় হাসপাতালে।
হাসপাতালগুলি পাঠানো এক নির্দেশিকায় স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি থাকা কোনও রোগীকে নিয়ে গিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন করানো যাবে না। এদিকে, হাসপাতালের সঙ্গে নিযুক্ত থাকা কিছু চিকিৎসক ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কিছু এজেন্টের তত্বাবধানে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
এমন রোগীদের ভর্তি হতে গেলে আগে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ থেকে নির্দিষ্ট রেফার-পত্র নিয়ে আসতে হবে। যেখানে উল্লেখ থাকবে, সংশ্লিষ্ট রোগীর যে চিকিৎসা প্রয়োজন, তার পরিকাঠামো ওই মেডিক্যাল কলেজে নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, সরকারি স্তরে উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া এবং স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের যথাযথ ব্যবহারের জন্য এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। আগামী দিনে অন্যান্য জেলাতেও এমন নির্দেশিকা দেওয়া হবে।’এই বিষয়ে সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের ড. সজল বিশ্বাস জানান, এই উদ্যোগ খুব ভালো। তবে সরকারি হাপসাতালে আগে উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা জরুরি।
এই প্রসঙ্গে আইএমএ-এর রাজ্য সভাপতি ডা. আবুল কাশেম বলেন,সরকার যেটা চেষ্টা করছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানেই রোগীরা আসুক। কিছু কিছু সময় সরকারি প্রতিষ্ঠানে জায়গার অভাব থাকে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হলে ‘রচও দিতে হবে না রোগী পরিবারদের। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পেও টাকা ‘রচ হবে না। এই উদ্যোগ ভালো।