পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ফের নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করছে। দেশে চিনের করোনার নতুন উপরূপ ধরার পড়ার পরই তৎপরতা শুরু হয়েছে দেশে। বুধবারই দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এবার কর্নাটকে বিমান বন্দরে শুরু হল কড়াকড়ি। কোভিড স্ক্রিনিং শুরু হল বিমান বন্দরে।
রাজ্যে করোনা মোকাবিলায় শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করা হবে এবং তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। নতুন করে কোভিড-ঢেউ আছড়ে পড়েছে চিনে।
ভারতে তিনজনের দেহে করোনার বিপজ্জনক নতুন ভ্যারিয়েন্টের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি এড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ করতে চলেছে কর্নাটক সরকার। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে পুনরায় কোভিড স্ক্রিনিং শুরু হতে চলেছে। বুধবারই এ কথা জানিয়েছেন কর্নাটকের স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা বিদ্যামন্ত্রী ডা. কে সুধাকর। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে বহু মানুষের যাতায়াত। এই অবস্থায় বিপদ ঠেকাতে ফের তৎপর কর্নাটক।
রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর জানিয়েছেন, সারা বিশ্বে করোনা বাড়তে থাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক যাত্রীর যাতায়াত অনেকটাই বেশি। আমরা সেখানে যাত্রীদের কোভিড স্ক্রিনিং শুরু করব।”
অর্থাৎ বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের করোনার ডবল ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়া রয়েছে কিনা এবং বিমানে ওঠার আগে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দেখা হবে। করোনার নতুন ঢেউ মোকাবিলায় বুস্টার ডোজের উপরেও জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সুধাকর।
তিনি বলেন, ‘আমাদের করোনার ডবল ডোজ ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া ১০০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অনেকেই বুস্টার ডোজ নেননি। যাঁরা এখনও বুস্টার ডোজ নেননি, তাঁদের অবিলম্বে সেটা দেওয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ করব।’
যে কোনরকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে কর্ণাটক সরকার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে এবং কেন্দ্রের গাইডলাইন মেনে সমস্ত বিধি নিষেধ মানা হবে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে করোনা মোকাবিলায় শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করা হবে এবং তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের গাইডলাইন মেনে করোনা আক্রান্ত রোগীদের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, চিনে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভারতেও সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্র। জনবহুল এলাকায় মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে। এর পাশাপাশি দেশের করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রতি সপ্তাহে মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সিইও আদর পুনাওয়ালা বলছেন, ভারতবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
এক ট্যুইটারে কোভিড ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের নির্মাতা সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সিইও আদর পুনাওয়ালা লিখেছেন, চিনে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর উদ্বেগজনক। কিন্তু, আমাদের অসাধারণ টিকাকরণ কর্মসূচি ও ট্র্যাক রেকর্ডের জন্য আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তবে, ভারত সরকার এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের গাইডলাইন সকলে মেনে চলুন।
এই পরিস্থিতিতে সতর্ক ভারত। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে চিঠি দিয়ে, সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ফের মাস্ক বিধি ফিরিয়ে আনার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সামনেই বড়দিন ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন রয়েছে। তার আগেই সতর্ক কেন্দ্র সরকার।
এদিকে বিএফ.৭ এটি অত্যন্ত সংক্রমণশীল বলে জানিয়েছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা। ইনকিউবিশন পিরিয়ডও কম বলে, মানব শরীরে প্রবেশের পর অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে। শুধু তাই নয়, আগে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন যারা, তাদেরও ফের সংক্রমিত করতে পারে বিএফ.৭। এমনকি, যারা কোভিডের টিকা নিয়েছেন, তাদেরও সংক্রামিত করতে পারে এই কোভিড সাবভেরিয়েন্ট। তবে শুধু চিন নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, বেলজিয়াম, জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক-সহ বিভিন্ন দেশে এই সাবভেরিয়েন্ট সনাক্ত করা হয়েছে।
এদিকে,কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়া কংগ্রেস নেতাদের মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং অন্যান্য সতর্কতা অবলম্বন করে কোভিড প্রোটোকল অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। অথবা দেশ ও জনগণের স্বার্থে ভারত জোড়া যাত্রা স্থগিত করার কথা বলেছেন।