পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তালাবন্ধ। অনুপস্থিত চিকিৎসক সহ নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা অন্তঃসত্ত্বা অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই জন্ম দিলেন সদ্যোজাতের। আর মাত্র ২০ মিনিট বেঁচে থাকার পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল সেই শিশু। মর্মবিদারক এই ঘটনার সাক্ষী থাকল মধ্যপ্রদেশের রেওয়া জেলা। চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা ধরা পড়ল এই রাজ্যে।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ কেন্দ্র সরকার চিকিৎসক নিয়োগ করলেও খুব কমই তাদের দেখা মেলে প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে। ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রেওয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. এন এন মিশ্রা।
জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রটি বন্ধ থাকার কারণে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই জন্ম নেয় শিশুটি। জন্মের ঠিক ২০ মিনিট পরেই মৃত্যু হয় সেই সদ্যোজাতের।
রেওয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. এন এন মিশ্রা জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের দোষ প্রমাণ হলে তারা কেউ ছাড় পাবে না।
মৃত সদ্যোজাতের মায়ের অভিযোগ, স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তিনি প্রসব বেদনা নিয়ে আসেন অ্যাম্বুলেন্সে করে। কিন্তু এসে দেখেন স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ আছে। অ্যাম্বুলেন্সেই শিশুর জন্ম দিতে বাধ্য হন তিনি। কিন্তু জন্মের ২০ মিনিট পরেই মৃত্যু হয় তার সদ্যোজাত সন্তানের। এই ঘটনায় তিনি গাফিলতির অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবি করেছেন।
রেওয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. এন এন মিশ্রা ঘটনার দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে যে চিকিৎসক জড়িত আছেন অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লাধ গ্রামের বাসিন্দা সুখলাল রাওয়াত জানিয়েছেন, তার স্ত্রী মমতার প্রসব বেদনা শুরু হয় রবিবার সন্ধ্যায়। মমতার অবস্থা দেখে আশাকর্মীরা দ্রুত রাজ্যের জননী এক্সপ্রেস প্রকল্পের অধীনে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনেন। জননী এক্সপ্রেস অ্যাম্বুলেন্স প্রকল্পের লক্ষ্য অসুস্থ শিশু থেকে গর্ভবতী মায়েদের দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া। কিন্তু সেই অ্যাম্বুলেন্সে করে মনিকর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসার পর দেখা যায় সেটি বন্ধ রয়েছে।
সুখলাল রাওয়াত আরও জানান, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তালাবন্ধ ছিল। সহকারি নার্স, ডাক্তার, সমস্ত স্টাফ নার্স সহ সমস্ত সদস্যরা অনুপস্থিত ছিলেন। আমার স্ত্রী আশাকর্মীদের সহায়তায় অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই সন্তানের জন্ম দেয়। কিন্তু জন্মের পর মাত্র ২০ মিনিটই বেঁচে ছিল আমার সন্তান। তার পরেই মারা যায়। রাওয়াত তার সন্তানের মৃত্যুর জন্য অভিযুক্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কঠিন শাস্তির দাবি করেছেন।