পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: গলার নলি কেটে প্রেমিকাকে খুন করে সেই ভিডিও ইন্সটাগ্রামে পোস্ট! চাঞ্চল্যকর এই ভিডিও ভাইরাল হতেই সোচ্চার সোশ্যাল মিডিয়া। অভিযুক্তের নাম অভিজিৎ পাতিদার। ২৫ বছর বয়সী মৃত প্রেমিকার নাম শিপ্রা ঝরিয়া। নারকীয় এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ব্যবসায়ী অভিজিৎ পাতিদার পুলিশকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘সাহস থাকলে আমাকে গ্রেফতার করা দেখাক’।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে। তবে এখনও পর্যন্ত অভিজিৎ পাতিদারকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জব্বলপুরের মেখলা রিসর্টে একটি কক্ষ থেকে তরুণীর নলিকাটা দেহ উদ্ধার করে।
ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করা ভিডিওতে অভিজিৎ বলেন, বেবাফাই নেহি কারনে কা’ (বিশ্বাসঘাতকতা করবে না)। তার পরেই সে কম্বল তুলে দেখায়, গলার নলি কাটা অবস্থায় এক মহিলার রক্তাক্ত দেহ। “দেখো ক্যায়সে পরি হ্যায়’ (দেখো কিভাবে পড়ে আছে)।
অপর একটি পোস্টে অভিজিৎ দাবি করে, ওই মহিলার সঙ্গে তার ব্যবসায়িক অংশীদার জিতেন্দ্র কুমারের প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। মৃত মহিলা জিতেন্দ্রের কাছ থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ধার নিয়ে জব্বলপুরে পালিয়ে আসে। জিতেন্দ্রর নির্দেশেই এই খুন করেছে সে’। তৃতীয় পোস্টে লেখে, ‘ বাবু হেভেনকে ফির মিলেঙ্গে’ (বাবু স্বর্গে আবার দেখা হবে)। এসএসপি প্রিয়াঙ্কা শুক্লা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খুনের ঘটনার পর অভিজিৎ পাতিদার প্রায় একমাস ধরে গা ঢাকা দিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল জিতেন্দ্রর বাড়িতে।
পুলিশ আসার আগেই সে পালিয়ে যায় তারা। অভিজিতের খোঁজে বিহার ছাড়াও মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের দল পাঠানো হয়েছে। প্রিয়াঙ্কা শুক্লা আরও জানিয়েছেন, মহিলার দেহে গলা ও কব্জি কাটার চিহ্ন মিলেছে। তার সামনে দুটি ব্লেড পড়ে ছিল। আমরা ঘর থেকে দুটি মদের বোতল এবং আরও কিছু জিনিস উদ্ধার করেছি। মৃত মহিলা রিসর্টে তার জাল আইডি কার্ড জমা দিয়েছিল, সেখানে সে নাম রাখি মিশ্র হিসাবে জানায়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির নামে একাধিক প্রতারণার মামলা সহ বহু মানুষের ঠকানোর অভিযোগ রয়েছে।
এএসপি শিবেশ বাঘেল জানান, অভিযুক্ত ৬ নভেম্বর মেখলা রিসর্টটি ভাড়া নেয়। সিসিটিভি ফুটেজে অভিযুক্ত অভিজিৎ পাতিদারকে একাই হোটেলের ওই রুমে ঢুকতে দেখা যায়। মহিলা আসেন তার পরের দিন। খাবারের অর্ডার দিয়েছিলেন অভিজিৎ। তার পর সেই হোটেল ছেড়ে দিয়ে চলে যায় অভিজিৎ পাতিদার। রিসর্টের কর্মচারীরা পুলিশকে জানায়, মহিলা রবিবার আসেন, পাতিদারের সঙ্গে কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে চলে যান, তখন পাতিদার রিসর্টে ছিলেন।
তবে সোমবার ফের রিসর্টে আসেন ওই মহিলা। এর পর অভিজিৎ পাতিদার বের হয়ে যান হোটেল থেকে। আর তাকে ফিরতে দেখা যায়নি। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ রাখার জন্য পুলিশের সন্দেহ হয়। ভিতর থেকে দরজা না খোলায়, হোটেলের কর্মীরা মাস্টার কি দিয়ে দরজা খোলে। সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই মহিলাকে ঘরে পড়ে থাকতে দেখে তারা পুলিশকে খবর দেয়।