পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সাদামাটা, ফেসবুকে সচেতনতার বার্তা দেওয়া চরিত্রের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক ‘খুনি চরিত্র’! গত ১১ নভেম্বর রায়গঞ্জের রবীন্দ্রপল্লী এলাকায় খুন হন ৪১ বছর বয়সী সুপ্রিয়া দত্ত নামে এক গৃহবধূ। গলার নলি কাটা অবস্থায় তার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই খুনের ঘটনায় প্রবাল সরকার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ‘বিবাহ বহির্ভূত’ সম্পর্কের জেরে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। সুপ্রিয়া দত্ত ও প্রবাল সরকার দুজনেই বিবাহিত ছিলেন। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তারা, এমনটাই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। গত বুধবার ফালাকাটা থানার পুলিশ উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বধূহত্যার ঘটনায় কোচবিহারের কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধার বাসিন্দা প্রবাল সরকারকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে ডিএসপি (সদর) রিপন বল জানান, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে।
তবে খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। প্রবালকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে। এখনও পর্যন্ত তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে এসেছে বেশ কিছু তথ্য। তদন্তের সূত্র ধরে তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, প্রবালের সঙ্গে সুপ্রিয়ার পরিচয় হয়েছিল লকডাউনের সময় ফেসবুকের মাধ্যমে। লকডাউন ধাপে ধাপে উঠতে শুরু করলে সুপ্রিয়া এবং প্রবালের সামনাসামনি দেখা হয়েছিল কয়েকবার।
প্রবালের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, নিজেকে সব সময় ‘সুখী পরিবার’ বলে পরিচয় দিত। প্রবালের এক পুত্রসন্তানও রয়েছে। ছেলের জন্মদিনও পালন করেছিলেন প্রবাল। ফেসবুকে স্ত্রী এবং পুত্রের সঙ্গে সেই ‘সুন্দর মুহূর্ত’-এর ছবিও শেয়ার করেছেন। ফেসবুকে নিজেকে একজন আদর্শবান, সমাজ সচেতন মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতেন।
বুধবার বিকেল ফালাকাটার একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রবালকে। তবে পুলিশের চোখে ধুলো দিতে মাথা কামিয়ে ফেলেছিল প্রবাল। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ফালাকাটার ওই হোটেল থেকে মিলেছে প্রবালের বাইক। পাওয়া গিয়েছে সুপ্রিয়ার বাড়ি থেকে উধাও হওয়া দু’টি মোবাইলও।
পুলিশ জানায়, রায়গঞ্জের রবীন্দ্রপল্লীতে সিসি ক্যামেরায় যার ছবি ধরা পড়েছিল সে আসলে এই প্রবালই।