পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ফুটবল বিশ্বকাপ আসর কে ইসলাম প্রচারে কাজে লাগাচ্ছে কাতার। আগামী ২০ নভেম্বর পর্দা উঠছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়া আসর ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ এর। রোমাঞ্চকর এই প্রতিযোগিতা এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশ কাতারে।
উপসাগরীয় দেশ কাতারের আলবাইট স্টেডিয়ামে ৩০ নভেম্বর উদ্বোধনী ম্যাচ ও ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামে সমাপনী ম্যাচ। ফিফা বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে এবারেই প্রথম কোন মুসলিম রাষ্ট্রে সর্বকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ইতিমধ্যেই বিশ্ববাসীকে সুন্দর একটি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান উপহার দিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দেশটি। বিশ্বকাপের আয়োজন কে ঘিরে নতুনভাবে সেজে উঠেছে কাতার । আরব ও ইসলামী স্থাপত্যশৈলী কে ধারণ করে প্রস্তুত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন আটটি স্টেডিয়াম।মুসলিম অধ্যুষিত দেশ কাতার, তাই বিশ্বকাপের সাজ ও আলোকসজ্জাতেও রাখা হয়েছে মুসলিম সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের ছোঁয়া।
৩২ দেশের অংশগ্রহণের এই অভিনব মিলনমেলাকে কাতার ইসলাম প্রচারের সুযোগ হিসেবে নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বিশ্বকাপের অতিথিদের স্বাগত জানাতে দারুন একটি পদ্ধতি অবলম্বন করেছে দেশটির সরকার।কাতারের রাজধানীর দোহা শহরের বিভিন্ন স্থানে দেয়ালজুড়ে লেখা রয়েছে হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর বাণী।সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছে বিভিন্ন স্থানে দেওয়াল জুড়ে সাঁটানো বর্ণিল মোরাল ব্যানার ও ফেস্টুন।
ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি ও মোরাল শোভা পাচ্ছে স্টেডিয়ামগুলোর আশেপাশে।আয়োজক কমিটি বিশ্বের জনপ্রিয় এই আসরকে সামনে রেখে কাতারের রাজধানী দোহার বিভিন্ন সড়কের পার্শ্ববর্তী একাধিক দেয়ালের ছবি প্রকাশ করেছ। ছবিগুলোতে বিশ্বনবী সাঃ এর বিভিন্ন হাদিস শোভা পাচ্ছে । যেখানে আরবি ও ইংরেজিতে ভাষায় রাসুল সাল্লালাহ সালামের প্রজ্ঞাপূর্ণ অনেক হাদিস লেখা হয়েছে। এগুলোর শান্তির বাণী হয়ে বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতারে সমাগত অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাবে।
হাদীস গুলোর মধ্যে অন্যতম……
“তোমরা সহজ করো, কঠিন করো না
মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপন করো,
তাদের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করো না”
হযরত মুহাম্মদ সাঃ
অর্থপূর্ণ হাদীসগুলো চলার পথে দর্শক ও পাঠকদের মনে তৈরি করবে আলাদা আবেদন ।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ছবি ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে।ব্যানারগুলো সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পরপরই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী বেশ প্রশংসিত হচ্ছে কাতার সরকার। অনলাইনে নেটিজেনরা বলছেন এটি বিশ্বদরবারে ইসলামকে ফুটিয়ে তোলার দারুন ও উদ্ভাবনী একটি পদ্ধতি। এইজন্য তারা কাতারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে । বিশ্বকাপের সময় নানা দেশ থেকে আসা লোকজনের কাছে ইসলামের পরিচয় তুলে ধরার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয় বিশ্বকাপ চলাকালীন ইসলামের শিক্ষা ও পরিচিতি তুলে ধরতে প্যাভিলিয়ন চালু করেছে দেশটির আউকাফ ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্যাভেলিয়নে বিভিন্ন ভাষায় মুদ্রিত ইসলাম ও আরব সংস্কৃতির পরিচিতিমূলক বই বিতরণ করা হবে। দর্শকদের সঙ্গে তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলার জন্য থাকবে দো ভাষী। বিশেষত উপসাগরীয় দেশ কাতারের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভি আর প্রযুক্তির মাধ্যমে দেখানো হবে পবিত্র কাবাঘর, হাযরে আসওয়াদ সহ মক্কা ও মদীনার ঐতিহাসিক ইসলামিক স্থাপনা। স্বাভাবিকভাবেই এই আসরকে উপলক্ষ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা ধর্মের বর্ণের দর্শক ও ভক্তরা আগমন ঘটাবে।আর সেই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে কাতার। দেশটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরো বিশ্বকাপ চলাকালীন আগত অতিথিদের সামনে ইসলামের শিক্ষা ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে কাজ করবে তারা ।