কৌশিক সালুই বীরভূম:- বীরভূম জেলায় বোমা বারুদের কারবার নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন পশ্চিমবঙ্গের পুরো ও নগর উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। “ভিন রাজ্য থেকে বোমা বন্দুক নিয়ে এসে বীরভূম তথা পশ্চিমবঙ্গকে অশান্ত করে তোলার চক্রান্ত করা হচ্ছে”। মঙ্গলবার বীরভূমের সিউড়িতে বিরসা মুন্ডার জন্ম দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এসে এমনই মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি গত সোমবার বিকেলে সাঁইথিয়া থানা এলাকায় বোমাবাজির ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ১২জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে গ্রাম কার্যত পুরুষ-শূন্য। বহু পরিবার আতঙ্কে বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছে। ভয়ে কেউ সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাইছে না।
এদিন সিউড়িতে বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের গত সোমবার বিকেলে সাঁইথিয়া থানার বহরাপুর গ্রামের বোমাবাজি ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন,”ভিন রাজ্য থেকে বোমা বন্দুক নিয়ে এসে বাংলাকে অশান্ত করার জন্য গভীর চক্রান্ত করা হচ্ছে। যে সমস্ত রাজনৈতিক দলের পায়ের তলায় মাটি নেই তারাই এই ধরনের কাজে যুক্ত হয়ে পশ্চিমবাংলাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে। এইভাবে তারা বাংলায় রাজনৈতিকভাবে স্থান পাওয়ার চেষ্টা করছে। এই চক্রান্তের ঘটনায় কিছু বাংলার মানুষ যুক্ত আছে। টাকার বিনিময়ে কিছু দুষ্কৃতী এই কাজ করছে। আমি কালকেই খবর পেয়েছি ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকে এসব ধরনের কাজ করছে। আমাদের রাজ্যের পুলিশ এই বিষয়ে করা নজরদারি করতে বলেছি। আমি এখান থেকে কলকাতায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রীকে বলবো ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সীমান্ত এলাকায় করা নজরদারি যাতে করা হয়। সীমান্ত এলাকার সিল করে দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যাতে কোনোভাবেই বোমা বন্দুক বা অস্ত্র নিয়ে এই রাজ্যে অপরাধমূলক কাজ যাতে দুষ্কৃতীরা না করতে পারে”। পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্ম ুর বিরুদ্ধে কু রুচিকর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ববি হাকিম বলেন,’আমরা গর্বিত দ্রৌপদী মুর্মুর মত একজনকে দেশের রাষ্ট্রপতি পেয়ে। তার জীবনী আমি পড়েছি। তিনি অত্যন্ত সহনশীল মহিলা। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী থেকে সকলেই এই বিষয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। তিনি অবশ্যই ক্ষমা করে দেবেন । এছাড়া আদিবাসীদের উন্নয়ন অন্যান্য রাজ্যের থেকে পশ্চিমবাংলায় অনেক বেশি মুখ্যমন্ত্রী করেছেন”। অন্যদিকে বহরাপুর গ্রামের বোমাবাজির ঘটনায় এক যুবক ও এক নাবালক গুরুতর জখম হন। তাদের বর্তমানে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। ওই দুইজনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কুড়ি জন ও আরো অন্যান্য একশ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে সুওমোটো মামলা দায়ের হয়েছে সাঁইথিয়া থানায়। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রায় ৫০ টি দেশী বোমা এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতদের সিউড়ি আদালতে তোলা হলে শেখ সাইদুলকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত নির্দেশ দেন বিচার। পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ দিনের হেফাজত চাওয়া হয়েছিল। বাকি ১১ জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত দেওয়া হয়েছে। বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি বলেন,”বোমাবাজির ঘটনায় বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে”।