পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: প্রায় দেড় বছর আগে বিজেপি শাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এই দেড় বছরে ৪,৪৪৯ অর্থাৎ প্রায় সাড়ে চার হাজার মুসলিম পরিবারকে গৃহহীন করেছে বিজেপি শাসিত অসম সরকার। শুধু গৃহহীন করা নয়, এই সময় জুড়ে গোটা অসমের মুসলিমদের কোণঠাসা করার সবরকম বন্দোবস্ত করেছে অসমের বর্তমান সরকার। মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো থেকে শুরু করে গরিব মুসলমানদের উচ্ছেদ ও ‘সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর’ তকমা দিয়ে বুলডোজার চালানো হয়েছে অসমের বেশ কয়েকটি মাদ্রাসায়। বিজেপি শাসিত অসম সরকারের মুসলিম বিরোধী নীতিগুলির বিরোধীতায় বৃহস্পতিবার অল বিটিসি মাইনোরিটি স্টুডেন্টসের (এবিএমএসইউ) প্রায় ৪০০ জন কর্মী বিক্ষোভ দেখান দিল্লির যন্তর মন্তরে।
প্রায় তিন ঘন্টার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তাঁরা অসমের মুসলিমদের দূরবস্থার কথা তুলে ধরেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও বিজেপি শাসিত অসম সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে ওই রাজ্যের মুসলিম নাগরিকদের জন্য সুবিচারের দাবি করেন তাঁরা। এই ইস্যু গুলিকে সামনে রেখে প্রাধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি স্মারকলিপিও জমা দেন তাঁরা।
এবিএমএসইউ-র সাধারণ সম্পাদক টাইসান হোসেন বলেছেন, তাদের সংগঠন বিজেপি সরকারের এই বিদ্বেষী রাজনীতি নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন, বিচলিত ও ক্ষুব্ধ। অসমের প্রায় ১ কোটির ও বেশি মুসলমানকে প্রতিনিয়ত হেনস্থা করছে বিজেপি সরকার। মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেখানকার মুসলিমদের প্রকাশ্যে অসম্মান করছে বিজেপি নেতারা। এই সরকারের নীতি সম্পূর্ণভাবে মুসলিম বিরোধী।
সংগঠনের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ক্ষমতায় আসার পর ৪,৪৪৯ মুসলিম পরিবারকে ঘর ছাড়া করা হয়েছে। উচ্ছেদ করা মুসলিম পরিবারগুলিকে এখনও পর্যন্ত বিকল্প কোনো মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের ব্যবস্থা করতে দেয়নি সরকার। টাইসান হোসেন বলেছেন, যে মুসলিম পরিবারগুলিকে সরকারি জমিতে বাস করার জন্য উচ্ছেদ করা হয়েছিল, তারা ভাঙন ও বন্যায় নিজেদের ঘর হারিয়েছিলেন। কারণ ১৯৫৪-২০০৭ পর্যন্ত অসমের ২.৮ মিলিয়ন বিঘা জমি নদীর জলে তলিয়ে গেছে। আর সেখানে যারা গৃহহীন হয়েছিল, তাদের বেশিরভাগই হতদরিদ্র মুসলমান। সংবিধান অনুযায়ী এমন ঘটনার শিকার হলে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। কিন্তু মুসলিম বিরোধী নীতিতে বিশ্বাসী বিজেপি সরকার তেমনটা করেনি।
সংগঠনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, অসমের বিজেপি সরকারের এনআরসি, ডি ভোটার ও ফরেনার্স ট্রাইবুনাল মামলার নামে হয়রানির শিকার হচ্ছে অসমের দরিদ্র মুসলিম ও হিন্দু পরিবারগুলি।