পুবের কলম প্রতিবেদক: বিগত পাঁচ বছরের রেকর্ড ভাঙল ডেঙ্গু সংক্রমণ। ২০১৭ সালের পর ২০২২ সালের ৪৪তম সপ্তাহে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পঞ্চাশ হাজার ছাড়িয়েছে। গত সাতদিনে রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৩৯৬। আক্রান্তের শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ ও কলকাতা।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কলকাতার। শুধুমাত্র কলকাতাতেই আক্রান্ত ৫ হাজার ৪২৮ জন। এই অবস্থায় পুর প্রশাসনের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। সূত্রের খবর, পুরসভার ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে নবান্নও। তবে তারপরেও অসহায় পুর কর্তারা।
মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, লোকবলের অভাব, তবে তারপরেও নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন পুর কর্মীরা।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালের নভেম্বরেই সব থেকে বেশি ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছে রাজ্যে। অন্যান্য জেলার তুলনায় কলকাতায় লাগামহীন হয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। আক্রান্তের শীর্ষে রয়েছে ১৪ টি ওয়ার্ড। সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে। ৪৩ তম সপ্তাহে এই ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ৪১২। এরপরেই রয়েছে ১০১ নম্বর ওয়ার্ড, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড, ১০৭ নম্বর ওয়ার্ড, ১১৫ নম্বর ওয়ার্ড, ১১২ নম্বর ওয়ার্ড, ৯৯ নম্বর ওয়ার্ড, ৩ নম্বর ওয়ার্ড, ১০০ নম্বর ওয়ার্ড, ৪২ নম্বর ওয়ার্ড, ৯৩ নম্বর ওয়ার্ড, ৯৮ নম্বর ওয়ার্ড, ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড, ও ৮১ নম্বর ওয়ার্ড।
একদিকে যখন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে শহরে, তারসঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যুর প্রকোপও। শুক্রবারও বজায় থাকে তার রেশ। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সহযোগী সুপার, চিকিৎসক অনির্বাণ হাজরার।
গত সপ্তাহে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রাণ যায় কলকাতা পুলিশের আইপিএস পদমর্যাদার এক কর্তার। এই মৃত্যু মিছিল কবে থামবে সেই প্রশ্ন নিয়েই এখন পুর প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে নাগরিকরা।
যদিও মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, বর্তমানে ডেঙ্গু অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে স্বচ্ছতার দিকে নজর রাখতে হবে নাগরিকদেরই। কারণ পুরসভার কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। লিমিটেড কর্মী সংখ্যা। ২ থেকে ৪ হাজার কর্মী নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে পুরসভাকে।
৫০ হাজার লোক নিয়ে প্রত্যেক ওয়ার্ডে নামিয়ে দেওয়ার মতো। ড্রোন সংখ্যাও হাতে গোনা। বর্তমানে পুরসভার কাছে ২ টি মাত্র ড্রোন রয়েছে। তাই সব ওয়ার্ডে ড্রোন ওড়ানো সম্ভব নয়। তাও যেখানে সম্ভব ড্রোনের মাধ্যমে স্প্রে করা হচ্ছে। তাই ডেঙ্গু রোধে নাগরিকদেরই সচেতন হতে হবে।