পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গুজরাতে ব্রিজ বিপর্যয়ে প্রাণ হারানোদের মধ্যে রয়েছে বাংলার এক যুবক। সংসারের হাল ধরতে ভিনরাজ্যে গিয়ে অকালে যে তাকে ঝরে যেতে হবে মানতেই পারছে না পরিবার-সহ প্রতিবেশীরা। ছেলের মৃত্যু-সংবাদ যেন মানতেই পারছেন না হাবিবুলের শোকগ্রস্ত বাবা।
চোখের জল বাঁধ মানছে না তাঁর। রবিবার সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে মাচ্ছু নদীর উপর ঝুলন্ত সেতুতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে মৃত্যু হয় পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী-২ মুকসিমপাড়ার কেশববাটির বাসিন্দা হাবিবুল সেখের। এদিন সন্ধ্যায় অভিশপ্ত ব্রিজে ছিলেন তিনিও। টিভিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর দেখে ভয়ে আঁতকে উঠেছিল গোটা পরিবার। রবিবার রাত ১টা নাগাদ পূর্বস্থলীর গ্রামে পৌঁছায় হাবিবুলের মৃত্যুর খবর।
জানা গিয়েছে, ছটপুজোর ছুটিতে সদ্য খোলা মোরবির ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরতে গিয়েছিল সে। দুর্ঘটনার সময় ব্রিজের উপরেই ছিল হাবিবুল। এরপর থেকে কোনও খোঁজ মিলছিল না তার। রবিবার গভীর রাতে উদ্ধারকারী দল তার দেহ উদ্ধার করে।
জানা গেছে, কিছু মাস আগে সোনার কাজের সূত্রে হাবিবুল গুজরাতে কাকার কাছে গিয়েছিলেন। রবিবার বিকালে তিন বন্ধুর সঙ্গে ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরতে গিয়েছিল। সদ্য খোলা মোরবির ব্রিজ দেখতে যাওয়াই কাল হল হাবিবুলের।
মৃতের বাবা মহিবুল সেখ বলেন, ‘ছেলে সোনার কাজের জন্য গুজরাতে গিয়েছিল। সেখানেই কাকার কাছে থাকত। রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে কেবল ব্রিজ দেখতে গিয়েছিল। তারপরেই জানতে পারলাম সে আর নেই।’ মৃতের খুড়তুতো ভাই মইনুল সেখ বলেন, ‘রাতে কাকা ফোন করে মৃত্যুর খবর দেন। পেট চালাতে ১০ মাস আগে গিয়েছিল গুজরাতে। দাদা যে আর নেই মন তা মানছেই না।’
মৃতের পরিজন সূত্রে জানা যায়, মোরবি থেকে আহমেদাবাদে আনা হচ্ছে মৃত হাবিবুল সেখের দেহ। সেখান থেকে বিমানে ফেরানো হবে রাজ্যে। আপাতত দেহ গ্রামে ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন কেশববাটির বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য, রবিবার ছটপুজোর দিন ৪০০ জনের বেশি মানুষ-সহ ঝুলন্ত সেতুটি ভেঙে পড়ে মাছু নদীতে। সেই চার শতাধিক জনের মধ্যে ১৪১ জনের মৃত্যু-সংবাদ পাওয়া গেছে। তাদেরই একজন বর্ধমানের হাবিবুল সেখ।
সোমবার সকালে পূর্বস্থলী উত্তরের সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক, তপন চট্টোপাধ্যায় হাবিবুল সেখের বাড়িতে যান এবং শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। বিধায়ক মৃতের পরিবারকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। মৃতদেহ দ্রুত ফেরানোর আশ্বাস দেন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়।