কৌশিক সালুই, বীরভূম: “ডেউচা-পাঁচামিতে জমি নিতে গিয়ে কাউকে তাপসী মালিক হতে হয়নি, সেখানে সিঙ্গুর করতে হয়নি, নন্দীগ্রামের মতো গুলি চালাতে হয়নি।
বাংলা ও জাতীয় স্বার্থে যারা ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্পের জন্য স্বেচ্ছায় জমি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন তাদের পাশে দাঁড়াও। তাদের ছেলেমেয়েদেরকে চাকরি দাও। নিশ্চিতভাবে তিনি করেছেন”। এভাবেই পূর্বতন বাম সরকারকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
শনিবার বীরভূমের সিউড়িতে ডেউচা পাঁচামি কয়লা প্রকল্পে জমি দাতাদের পরিবারের মনোনীত প্রার্থীকে পুলিশের পর এদিন গ্রুপ-ডি বিভাগের নিয়োগ পত্র তুলে দেওয়া হল।
তিনি ছাড়া সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, দুই সাংসদ শতাব্দী রায় এবং অসিত মাল, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিআইজি বর্ধমান রেঞ্জ শ্যাম সিং, পি ডি সি এল এর চেয়ারম্যান পি বি সেলিম, জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা।
এদিন ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্পাঞ্চল প্রকল্পে পুনর্বাসন প্যাকেজের আওতায় জমিদাতাদের মনোনীত প্রার্থীদের প্রায় ২০০ জনকে গ্রুপ ডি বিভাগের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হল। এছাড়াও ৫৪ জন জমি দাতার মনোনীত প্রার্থী যাদের বয়স এখনো ১৮ বছর হয়নি তাদেরকে মাসিক ১০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কর্মসূচি শুরু হল। যতদিন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট মনোনীত প্রার্থী চাকরিতে যোগ না দিচ্ছেন ততদিন তিনি এই ভাতা পাবেন।
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই প্রায় ৪০০ জন পুলিশের যোগ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩০০ জন ব্যারাকপুর থেকে ট্রেনিং করে বীরভূম জেলায় চলে এসেছেন।
এদিনের এই কর্মসূচিতে এসে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পূর্বতন শাসক তথা বর্তমান বিরোধী দলকে রীতিমতো সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ” বাংলার মানুষের জন্য উন্নয়ন করছেন বলে বিরোধীরা রীতিমত কুৎসা করে চলেছেন অপবাদ দিচ্ছেন। এখনো বলছি সিপিএম এবং তখনকার সরকার সিঙ্গুর থেকে টাটা কে তাড়িয়েছে ষড়যন্ত্র করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়।
ডেউচা পাঁচামিতে আপনাদের জমির অধিকারকে সম্মান দেওয়ার জন্য আপনারা যেটা চেয়েছেন সেটাই মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন। গরীব মানুষের জমি তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, লাঠি মেরে, বাড়ির মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করে নয়, তাদের ইচ্ছায় জমি নিয়েছেন। সেদিন সিঙ্গাপুরে টাটাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন নয়। সেই আন্দোলন গরীব মানুষদের স্বার্থের আন্দোলন।
‘বাবু বললেন দুই বিঘা জমি তুমি দিয়ে দাও’ সেটা তৎকালীন বাম সরকার ফিরে আনার চেষ্টা করেছিল তার বিরুদ্ধেই আন্দোলন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে সম্মতির ভিত্তিতেই এখানে জমি নেওয়া হয়েছে। রক্তের বিনিময়ে নেওয়া হয়নি ডেউচা পাঁচামি তে। মানুষ আনন্দের সঙ্গে স্বেচ্ছায় জমি দিয়েছেন”।