নয়াদিল্লি ৫আগষ্ট: কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী কৃষকরা স্বাধীনতা দিবসকে “কিষাণ মজদুর আজাদী সংগ্রাম দিবস” হিসাবে পালন করবে এবং সারা দেশে তেরঙ্গা মিছিল করবে। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা (এসকেএম) বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা করেছে।
এক বিবৃতিতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা বলেছে, “কেন্দ্রের কৃষি বিলের বিরোধিতায় ট্রাক্টর জাতীয় পতাকা লাগিয়ে মিছিল করবেন কৃষকেরা। এতে অন্যায়ের কিছু নেই বলে দাবি তাঁদের। আগামী ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন এই দৃশ্য দেখতে পাওয়া সত্যিই গর্বের।”
১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন ফের ট্রাক্টর মিছিলের ডাক দিলেন ভারতীয় ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকাইত। দিল্লির যন্তর মন্তরে দাঁড়িয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এই সুরে হুংকার ছাড়লেন প্রতিবাদী কৃষক নেতা।
দিল্লির পাশাপাশি তিনি হরিয়ানার ঝিন্দের কৃষকদের তেরঙ্গা উত্তোলনে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সোজাসুজি বিজেপি শাসিত হরিয়ানা সরকারকে এক হাত নিয়ে তিনি জানান, “প্রতিবাদী কৃষকরা যদি তেরঙ্গা লাগিয়ে মিছিল করতে না পারে তাহলে মুখ্যমন্ত্রী কোন অধিকারে তেরঙ্গা তুলবেন? কৃষকদের ট্রাক্টর নিয়ে তেরঙ্গা মিছিল করতে দেওয়া হোক”
উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ, হাপুর এবং আমরোহার মত শহরগুলি থেকেই পরবর্তী কৃষক জাঠা সূচনা হওয়ার কথা। স্বাধীনতার ঠিক একদিন আগে জাঠাগুলি দিল্লি অভিমুখে যাত্রা করবে বলে কৃষক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, এই বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লির রাজপথে নামে প্রতিবাদী কৃষক সংগঠনগুলি। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে কৃষকদের। যার জেরে মৃত্যু হয়েছিল কয়েকজন কৃষকের। আহত হন প্রচুর কৃষক।
লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা নামিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাকে কেন্দ্র করে যথেষ্ট বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল জাতীয় রাজনীতিতে। ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে দিল্লি পুলিশ সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। গ্রেফতারও হন বহু নেতা। তারপর দেশে করোনা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে থাকলে কৃষক আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়।
সম্প্রতি দিল্লি যন্তর মন্তরে কৃষকদের শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রতিবাদ প্রদর্শনের অনুমতি দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। সেখানে প্রতিদিনই কৃষক সংসদের আয়োজন করছেন প্রতিবাদী কৃষকেরা। কেন্দ্রের কৃষি বিলের বিরোধিতার পাশাপাশি দেশে কৃষি উন্নয়ন নিয়ে নানান রকম আলোচনা চলছে সেখানে। সংসদে চলা বাদল অধিবেশনের সময় যন্তর মন্তরে কৃষকদের সমাবেশ যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এবার উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাবের মতন বিভিন্ন রাজ্যে স্বাধীনতা দিবসের দিন ট্রাক্টর মিছিলের ডাক দিয়ে কৃষক আন্দোলনকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলার চেষ্টা করছেন টিকাইত। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।