গত সপ্তাহ থেকে কিয়েভসহ ইউক্রেনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া, ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক, খারকিভ, মাইকোলাইভ, জাইটোমির এবং সুমি অঞ্চলের বহু জায়গায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্ধকারে ডুবেছে ইউক্রেন। দেশটির ১,১০০-রও বেশি শহর ও গ্রাম বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে কিয়েভ। ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সামরিক বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে মঙ্গলবার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী। সাগর ও স্থল থেকে চালানো ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সফলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে বলে দাবি রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রকের। ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও একই দাবি করা হয়েছে। দেশটি জানায়, মঙ্গলবারের হামলায় অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশজুড়ে ১,১৬২-রও বেশি শহর ও গ্রাম বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। এগুলো মেরামতে কাজ করছে জরুরি উদ্ধারকর্মীরা। ইউক্রেনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রুশ সেনা আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই। যতটা সম্ভব আমরা সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি।’ এ বিষয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে চালানো রুশ হামলায় দেশের ৩০ শতাংশ পাওয়ার স্টেশন ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে গোটা দেশে ব্যাপক ব্ল্যাকআউট হয়েছে। এক ভিডিয়ো বার্তায় জেলেনস্কি রুশ অভিযানকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে অভিহিত করেন। ১০ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ জরুরি অবকাঠামোগুলোতে রাশিয়ার ব্যাপক হামলা চালানোর প্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘মস্কো যেভাবে হামলা চালাচ্ছে, তাতে তাদের সাথে আলোচনার আর কোনও জায়গা বাকি নেই।’ কিয়েভের এনার্জি অপারেটর ডিটিইকে জানিয়েছে, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার কারণে রাজধানীর একাংশে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। প্রকৌশলীরা বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখছেন এবং শহরের বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। কিয়েভের পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা জাইটোমির কিছু অংশ, ডিনিপ্রো শহরের বাম অংশে এবং পার্শ্ববর্তী শহর পাভলোগ্রাদে একইভাবে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, ক্রিমিয়ার সাথে রাশিয়ার সংযোগকারী কার্চ ব্রিজে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। ইউক্রেন সরাসরি ওই হামলার সাথে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার না করলেও কিয়েভ এ ঘটনায় বেশ উল্লাস প্রকাশ করেছিল। তখনই রাশিয়া জানিয়েছিল, এর জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে কিয়েভকে।
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানি ড্রোন ব্যবহার নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তবে, সব বিতর্ক পাশ কাটিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র বিক্রি চুক্তির কথা নিশ্চিত করেছে তেহরান। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি মস্কো। তবে, ইরানের ড্রোন ব্যবহার করায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে আমেরিকা। এদিকে, রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে আবাসিক এলাকায় যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।