পুবের কলম প্রতিবেদক: খাতায়-কলমে দুর্গোৎসবের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো এক বছর। এখনো উৎসব শেষ হয়নি বাংলায়। প্রতিমা নিরঞ্জনকে কেন্দ্র করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে শনিবার ছিল দুর্গাপুজো কার্নিভাল। বিসর্জনকে কেন্দ্র করেই উৎসব।
মুখ্যমন্ত্রী ২০১৬ সালে এই কার্নিভাল শুরু করলেও এবছর বাংলার জন্য এই উদযাপন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ইউনেস্কো বাংলার দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর গোটা বিশ্বের নজর আমাদের দুর্গাপুজোর দিকে। আজ সেই উদযাপনকে আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে শহরে আয়োজিত হল দুর্গাপূজা কার্নিভাল। উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতা এবং সল্টলেকের মোট ৯৫ টি দুর্গাপুজো কমিটিকে নিয়ে বিসর্জন মিছিল করে মেগা শো। থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বিভিন্ন পুজো কমিটির তরফে ট্যাবলো সাজানো একের পর এক পারফরম্যান্স। সব মিলে শনিবারের সান্ধ্য রেড রোড যেন আরব্য রজনীর গাঁথা।
২ বছর করোনার কারণে কার্নিভাল হয়নি শহরে। করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমতে এবছর সেই দু বছরের শূন্যতা মিটিয়ে নিল কলকাতা। বিসর্জনকে কেন্দ্র করে নাচে গানে এক অন্যরকম ছবি ফুটে উঠলো কলকাতার রাজপথে। এই কার্নিভালের জন্যই থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ট্যাবলো সাজিয়েছিল চেতলা অগ্রণী, সিংহী পার্ক, চক্রবেড়িয়া, বাবুবাগান, দমদম তরুণ দল, কলেজ স্কোয়ারের মতো পুজো কমিটিরা। আর এদিন বিকেলে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় একে একে যোগ দিতে দেখা গেল কলকাতার সেরা পুজো কমিটি গুলোকে। ঢাকের বাদ্যি, গরবা নাচ, ধামসা-মাদল কি ছিল না সেখানে। সব মিলিয়ে রঙিন হয়ে উঠছে পুজোর কার্নিভাল।
প্রতিদিন প্রশাসনিক কাজে যে মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা দেখি এদিন তাঁর পুজো কার্নিভালে এক অন্য ছবি দেখল শহর। কখনো বহুরূপী সাজে শিশুদের হাত থেকে গোলাপ নিয়ে তাদের চকলেট বিলোলেন। কখনো আবার আদিবাসী মহিলাদের গানের সঙ্গে তালে তালে পা মেলালেন। আবার কখনো দেখা গেল কাসর বা করতাল হাতে সঙ্গত দিতে।
বিকেল ৪:১৫ নাগাদ রেড রোডে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। তখনো রেড রোডের দুপাশে অনেক নিমন্ত্রিতের চেয়ে আর ফাঁকা। বাইরে বহু মানুষ এই কার্নিভালকে প্রত্যক্ষ করার জন্য জড়ো হয়েছেন তাদের কাছে কার্নিভালে প্রবেশের কার্ড নেই। মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশকে নির্দেশ, যারা এই অনুষ্ঠান দেখতে চায় তাদের ভেতরে বসার ব্যবস্থা করতে সেই মতো সাধারণ জনতাকে সুযোগ করে দেয় পুলিশ। এরপর ঠিক সাড়ে চারটা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
বিসর্জন কার্নিভালের প্রসেশন শুরু হয় আলিপুর বডি গার্ড লাইন্সের পুজো দিয়ে। এরপর একে একে দক্ষিণ কলকাতা সর্বজনীন, কলেজ স্কোয়ার সর্বজনীন, বেহালা নূতন দল, ভবানীপুর ৭৫ পল্লি, অবসর, সিংহী পার্ক, কাশী বোস লেন, হিন্দুস্থান পার্ক সর্বজনীন, শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব, আহিরীটোলা দুর্গোৎসব সমিতি, বরানগর নতুন পাড়া দাদা-ভাই সংঘ, দমদম তরুণ দল, বেলঘরিয়া বাণী মন্দির, বালিগঞ্জ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন, ৪১ পল্লি, হালতু নন্দীবাগান দুর্গোৎসব, দক্ষিণপাড়া দুর্গোৎসব কমিটি, দমদম পার্ক তরুণ সঙ্ঘ প্রত্যেকেই একে অপরকে পাল্লা দিচ্ছে তাদের উপস্থাপনে।