নিজস্ব প্রতিবেদক: ষাটের দশকে বামেরা স্লোগান তুলেছিলেন, ‘লাঙল যাঁর জমি তাঁর।’ দীর্ঘ ৩৪ বছর রাজ্যে বামেদের শাসনক্ষমতায় থাকতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন গ্রাম বাংলার কৃষকরা। রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষায় এবং পঞ্চায়েত ভোটে ঘুরে দাঁড়াতে এবার বামেদের কৌশলই অনুসরণ করতে চলছে পদ্ম শিবির। গ্রাম বাংলা দখলের যুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসকে রুখতে কৃষকদেরই টার্গেট করা হয়েছে। কৃষকদের বঞ্চনা নিয়ে আন্দোলন করে পঞ্চায়েত ভোটে ফসল তোলার পরিকল্পনা করেছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। পুজোর পরেই যাতে কৃষক আন্দোলনে ঝাঁপানো যায়, তার জন্য দলের কিষাণ মোর্চাকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সেই নির্দেশ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছে কিষাণ মোর্চার শীর্ষ নেতৃত্ব। বুধ ও বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির লাটাগুড়ির এক পাঁচতারা রিসর্টে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, ছত্তিশগড় এবং আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কিষাণ মোর্চার পদাধিকারীদের নিয়ে এক বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল।
কিভাবে কৃষকদের মন জয় করতে হবে, তাঁদের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করানোর বিষয়ে ইন্ধন জোগাতে হবে বাংলার কিষাণ মোর্চার পদাধিকারীদের সেই পাঠ দিয়েছেন বাকি রাজ্যের প্রতিনিধিরা।
বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, গ্রাম বাংলার ভোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কৃষকরা। পঞ্চায়েতের ভাগ্যদেবতার ভাগ্য যাঁরা ঠিক করেন তাঁদের ৬০ শতাংশই কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। অন্তত ৭২ লক্ষ কৃষক রয়েছেন রাজ্যে। তাদের মধ্যে ৯৬ শতাংশই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি। তাঁদের সমর্থন পেলে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়রথ রুখে দেওয়া যাবে। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ১৪টি জেলা পরিষদ দখল করা যাবে। আর পঞ্চায়েত ভোটে অপ্রত্যাশিত ফল করা গেলে পরের বছর লোকসভা ভোটে অন্তত ২৬টি আসনে জয় পেতে কোনও অসুবিধা হবে না।
কিষাণ মোর্চার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শম্ভু কুমারের কথায়, ‘রাজ্যের তৃণমূল সরকারের অসহযোগিতায় কেন্দ্রের একাধিক প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত বাংলার চাষিরা। ভিন রাজ্যের কৃষকরা কী-কী সুবিধা পান তা রাজ্যের কৃষকদের কাছে তুলে ধরা হবে।
মোদি সরকার অন্নদাতাদের জন্য যে যে কল্যাণমূলক প্রকল্প শুরু করেছেন, তা যাতে রাজ্যে চালু হয় তার জন্য কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন করা হবে।’