পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এখনও সমাজের বুকে দগদগে ঘা -এর মতন হয়ে আছে লিঙ্গ বৈষম্য।পুত্র সন্তান চাই, তাই সর্বসমক্ষে নগ্ন করিয়ে স্নান করানো হল গৃহবধূকে।২১ শতকেও পুত্র সন্তানের লোভে অনেকেই নানান পন্থা ব্যবহার করে থাকে, তা বলে নগ্ন করে স্নান করানোর ঘটনা একেবারেই বিরল।শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্য।চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পুণেতে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন মহিলাটি নিজে এই ঘটনার পরিপেক্ষিতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে।ইতিমধ্যেই মহিলার স্বামী, শ্বশুর সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুণে পুলিশ।
পুলিশের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মহিলাটি জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে তাঁর বিয়ে হয়। তারপর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে নিয়মিত নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি।প্রায় দিনই পণ ও পুত্র সন্তানের লোভে তাঁকে মারধর ও মানসিক ভাবে নির্যাতন চালাত স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।পুত্র সন্তানের লোভে একাধিকবার নানা ভণ্ড তান্ত্রিকের কাছে গিয়েছিল, তাতে কাজ না হওয়ায়। এবারে নতুন এক তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
‘পুত্র সন্তান পেতে গেলে বিবস্ত্র অবস্থায় প্রকাশ্যে ঝরনার জলে স্নান করতে হবে মহিলাকে’ এমনটাই দাবি ছিল ওই ভণ্ড বাবার। তান্ত্রিকের কথা মেনে তাঁকে রায়গড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। একপ্রকার জোর করেই তাঁকে নগ্ন করে স্নান করানও হয়।
এই প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছেন, শুধু নির্যাতন করেই থেমে থাকেনি নিপীড়িতার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। ওই মহিলার স্বামী তাঁর স্বাক্ষর জাল করে কোনও এক ব্যবসায় ঋণের জন্য তাঁর পৈতৃক সম্পত্তির ৭৫ লক্ষ টাকা নেন। নির্যাতিতা ওই মহিলাদের অভিযোগের পর পুলিশ গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।‘বেটি বচাও বেটি পড়াও’-এর বার্তা দিতে সরকার যতই সোচ্চার হোক না কেনও, সমাজে পুত্রসন্তান কামনার ছবিটা কিন্তু বিশেষ একটা বদলায়নি।বিজ্ঞান যতই বলুক লিঙ্গ নির্ধারণের পিছনে মানুষের হাত নেই, কিন্তু অন্ধবিশ্বাসের কাছে এই সব যুক্তি গ্রহণ যোগ্য নয় বললেই চলে।