পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : পর পর দুর্ঘটনা। একাধিকবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে মিগ ২১ যুদ্ধ বিমান। ২০২১ সালের ২১ মে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বায়ুসেনার মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধবিমান। দুর্ঘটনায় পঞ্জাবের মোগার কাছে এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পাইলটের। ২০১৮ সালে মিগ-২৯কে রানওয়েতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। প্রাণে বেঁচে যান পাইলট। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বায়ুসেনার মিগ-২১ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান। সেক্ষেত্রে প্রাণে রক্ষা পান দুই পাইলট। ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফের দুর্ঘটনা। ২৭ ফেব্রুয়ারি পাক বায়ুসেনার সঙ্গে মাঝ-আকাশে ডগ-ফাইটের সময় দুর্ঘটনায় ধ্বংস হয় কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের মিগ-২১ বিমান। বৃহস্পতিবারও রাজস্থানের বারমেরে ভেঙে পড়ল মিগ ২১। প্রাণ হারিয়েছেন দুই পাইলট। কি কারণে এই বিমানটি ভেঙে পড়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। ঘটনার দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
দুর্ঘটনার কারণে একাধিকবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে মিগ ২১ যুদ্ধ বিমানের নাম। বার বার দুর্ঘটনার কারণে বহু বিতর্কও হয়েছে। এমনকী বায়ুসেনা কর্মীর পরিবারের তরফেও এই বিমানগুলি বাতিলের আবেদন জানানো হয়। সব দিক বিবেচনা করে এবার এই পুরনো বিমানগুলি বাতিল করে আধুনিকীকরণের পথে হাঁটতে চলেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। চার দশক আগে দেশের বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল রুশ-নির্মিত এই মিগ বিমানগুলি।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, একের পর এক দুর্ঘটনার জেরে সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যেই একটি ‘মিগ-২১ বাইসন’ স্কোয়াড্রনকে বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বায়ুসেনা। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যেই রুশ নির্মিত এই বিমানগুলি বাহিনী থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
বায়ুসেনার এক শীর্ষ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে এএনআই জানিয়েছে, শ্রীনগরে মোতায়েন মিগ-২১ বিমানের ৫১ নম্বর স্কোয়াড্রনটিকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তুলে নেওয়া হবে। ২০১৯ সালে পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর পাক বায়ুসেনার হামলার জবাব দিয়েছিল এই ৫১ নম্বর স্কোয়াড্রনই। মিগ-২১ বিমানে চড়েই পাকিস্তানে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছিলেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান।
প্রসঙ্গত, মিগ সিরিজের ‘ফ্লাইং কফিন’ তকমা পাওয়া এই বিমান চালাতে গিয়ে বহু পাইলট প্রাণ হারিয়েছেন। সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল যান্ত্রিক ত্রুটি। তার পরেও বিমানগুলিতেই বায়ুসেনার পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেওয়া কাজ চলে আসছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ এই বিমানগুলিকে আর বায়ুসেনায় না রাখার জন্য নিহত সেনাকর্মীর পরিবারের তরফ থেকেও একাধিকবার আবেদন জানানো হয়েছে।