পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মৃত্যুতে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে জাপানিরা। শুক্রবার সকালে এক বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন শিনজো আবে। এরপর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মারা যান আবে। শনিবার সকালে নারা শহর থেকে রাজধানী টোকিওতে আবের মরদেহ পৌঁছায়। সেখানেই তার শেষকৃত্য হবে। দেশটির নাগরিকরা ফুল ও মোমবাতি জ্বালিয়ে আবেকে স্মরণ করছেন।
এদিকে, এই হত্যাকাণ্ড তদন্তে ৯০ সদস্যের টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে জাপান পুলিশ। যে স্থানে এই হামলা হয়েছে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন ছিল তাও খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তকারী পুলিশ জানায়, ৪৩ বছরের হামকালারী তেতসুয়া ইয়ামাগামি একটি ‘নির্দিষ্ট ধর্মীয় সংস্থার’বিরুদ্ধে ক্ষোভ পোষণ করত। তেতসুয়া মনে করেছিল, সেই সংগঠনের সঙ্গে শিনজো আবেও যুক্ত। পুলিশ জানায়, ইয়ামাগামি নিজের বাড়িতে তৈরি বন্দুক দিয়ে গুলি করার কথা স্বীকার করেছে। মঙ্গলবার টোকিওতে শিনজো আবের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার এক রাজনৈতিক সভায় বক্তব্য রাখার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা যান আবে। জাপানে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী তিনি। বন্দুক সহিংসতা যে দেশে বিরল সেই দেশে ৬৭ বছরের রাজনীতিবিদকে হত্যার ঘটনায় হতবাক সকলে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় নিজের পুরনো দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এক প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছিলেন শিনজো আবে।
এলডিপির সদস্য এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, আবের মৃত্যুর খবরে তিনি ‘বাকরুদ্ধ’হয়ে পড়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, জাপানের গণতন্ত্র ‘কখনই সহিংসতার কাছে নত হবে না’।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,, এক ব্যক্তি বড় একটি বন্দুক নিয়ে আবের কয়েক মিটারের মধ্যে চলে আসে আর দুইবার গুলি চালায়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাটিতে পড়ে গেলে পথচারীরা অবিশ্বাস ও আকস্মিকতায় চিৎকার শুরু করেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বন্দুকধারীর দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েন। হামলাকারী দৌড়ানোর কোনও চেষ্টা করেননি। আবের ঘাড়ে ২টি গুলির ক্ষত তৈরি হয় এবং হামলার সময় তার হৃদপিণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিকিৎসকরা কয়েক ঘণ্টা ধরে আবেকে বাঁচানোর চেষ্টা চালালেও কাজ হয়নি। স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল পাঁচটা তিন মিনিটে আবে মারা যান।