পূবের কলম ওয়েবডেস্কঃ হুগলির প্রায় আট বছর ধরে এ স্কুলে কোন শিক্ষক- শিক্ষিকা নেই। পড়ুয়ারা নিজেরাই স্কুলে আসে। যে যার মত করে নিজেরাই পড়াশোনা করে। মিড ডে মিলের খাবার নিয়ে অবলীলায় বাড়ি চলে যায়। বিস্ময়কর ওই ঘটনাটি বাস্তবে ঘটে চলেছে, চাঁপদানির একটি গার্লস স্কুলে।
জানা যায়, ২০১৪ সাল থেকে ওই স্কুলে কোন শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। শিক্ষক-শিক্ষিকা বিহীন ওই স্কুলটি দীর্ঘ আট বছর ধরে চলছে। ওই গার্লস স্কুলের ছাত্রীরা নিয়মিত স্কুলে আসে। নিজেরাই তাদের খেয়াল খুশি মতো পঠন-পাঠন করে। পরিশেষে, মিড ডে মিলের খাবারটুকু নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেয়। এভাবেই চলছে দৈনন্দিন স্কুল। বছর শেষে ছাত্রীদের হাতে বাৎসরিক পরীক্ষার রেজাল্ট ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই রেজাল্ট ছাত্রীদের এসআই অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এসআইয়ের নজরে থাকা সত্ত্বেও স্কুলে শিক্ষক দেওয়ার বিষয়ে কোন হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।
জানা যায়, চাঁপদানির এলাকায় ওই জুনিয়র গার্লস স্কুলটি একমাত্র উর্দু ভাষাভাষী স্কুল। স্কুলের ছাত্রীর সংখ্যা মাত্র ৭১ জন। ওই স্কুলকে মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করার জন্য একাধিকবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। স্কুল আগাগোড়া যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই থেকে গেছে। ওই স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকা না থাকায় স্কুল ছুট পড়ুয়ার সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে। ওই স্কুলের একমাত্র ত্রাতার ভূমিকায় রয়েছেন মুস্তাক আহমেদ নামে এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। তারই পরিচালনায় চলছে স্কুল। মাঝেমধ্যেই স্থানীয় দুই একজন যুবক স্কুলে এসে ছাত্রীদের পড়িয়ে দিয়ে যান।
প্রসঙ্গত, চাঁপদানি এলাকা সর্বাদিক জুটমিল এলাকা বলে পরিচিত। সংখ্যালঘু উর্দু ভাষাভাষী শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের বসবাস। তাদের ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করে তোলার জন্য ওই এলাকায় ২০০০ সালে একটি ভাষাভাষী গার্লস স্কুল গড়ে তোলা হয় বলে জানান স্থানীয় কাউন্সিলার জাকির হোসেন। স্কুলের জন্মলগ্ন থেকেই শিক্ষকের অভাব ছিল। একজন মাত্র শিক্ষক দিয়ে স্কুলের পঠন পাঠন চলত।
ওই শিক্ষকও ২০১৪ সালে অন্যত্র বদলি হয়ে যান। তারপর থেকেই স্কুলটি শিক্ষকবিহীন হয়ে পড়ে। স্কুলের মিড ডে মিলের ব্যবস্থা চালু রয়েছে। অথচ পঠন-পাঠনের কোনও শিক্ষক নেই। এসএসসির মাধ্যমে যদি শিক্ষক নিয়োগ এই মুহূর্তে করা না যায় তাহলে পার্শ্ববর্তী কোন স্কুল থেকে শিক্ষক দেওয়া হোক ওই স্কুলে বলে দাবি জানান পড়ুয়া থেকে অভিভাবকদের। যদিও এবিষয়ে হুগলি জেলা স্কুল পরিদর্শক তপন বসু জানান, বিষয়টি সর্ম্পকে জানিনা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।