পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: জরুরি ভিত্তিতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এমআরএনএ ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দিল ডিসিজিআই (ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল)। ১৮ বছর ও তার বেশি বয়সীদের দেওয়া যাবে এই টিকা। পুনের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা জেনোভা বায়োফার্মাসিউটিক্যালস এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। সংস্থার লক্ষ্য প্রতি মাসে ৪০-৫০ লক্ষ ভ্যাকসিন উৎপাদন করা। করোনা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে শুধু ভারতে নয়, কোম্পানির লক্ষ্য দেশের বাইরে বিশ্বজুড়ে কম আয়ের উন্নতমানের ভ্যাকসিন প্রস্তুত ও সরবরাহ করা। ভারতে তৈরি এই ভ্যাকসিনটি গেম চেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে।
জেনোভা বায়োফার্মাসিউটিক্যালস-এর তৈরি এমআরএনএ ভ্যাকসিন দেশে তৈরি প্রথম ও বিশ্বে করোনা প্রতিরোধে অনুমোদিত তৃতীয় ভ্যাকসিন।
দুটি ডোজের জন্য অনুমোদিত এই ভ্যাকসিন ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণ করা যায়। এই ডোজগুলি ২৮ দিনের ব্যবধানে প্রয়োগ করা হবে। প্রস্তুতকারক সংস্থার দাবি ভ্যাকসিনটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত নিরাপদ। জেনোভা বায়োফার্মাসিউটিক্যালস এর তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে।
শুক্রবার সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটির (এসইসি) বৈঠকে, করোনা মোকাবিলার জন্য এই এমআরএনএ ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল, যা মঙ্গলবার গভীর রাতে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল (ডিসিজিআই) দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে। গত মাসে, জেনোভা তার ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্বে ট্রায়াল সংক্রান্ত একটি বিবৃতি জারি করেছে। বলা হয়েছে, ফেজ-২ ও ফেজ-৩ ট্রায়ালে ৪ হাজার মানুষের ওপর এই ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয়েছে। ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা জেনোভা বায়োফার্মাসিউটিক্যালস দেওয়া তথ্য সন্তোষ প্রকাশ করে। এর পরেই করোনা প্রতিরোধে এই ভ্যাকসিনকে জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র দেয়। কোম্পানি প্রথমে এপ্রিল ও পরে মে মাসে তথ্য জমা দেয়।
মেসেঞ্জার আরএনএ হল এক ধরণের আরএনএ যা শরীরে প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়। এমআরএনএ কোষের অভ্যন্তরে প্রোটিন কীভাবে তৈরি হয় তা তৈরি করে। একবার কোষগুলি প্রোটিন তৈরি করে, তারা দ্রুত এমআরএনএ ভেঙে দেয়। ভ্যাকসিনের এমআরএনএ কোষের নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করে না এবং ডিএনএ পরিবর্তন করে না। এই ভ্যাকসিনটিও হাতের উপরের দিতে পেশিতে দেওয়া হয়। শরীরের ভিতরে পৌঁছে কোষে স্পাইক প্রোটিন তৈরি করে। করোনা ভাইরাসের ওপরে স্পাইক প্রোটিনও পাওয়া যায়। এইভাবে, যখন শরীরে প্রোটিন তৈরি হয়, তখন আমাদের কোষগুলি এমআরএনএ ভেঙে তা সরিয়ে দেয়। কোষে স্পাইক প্রোটিন আসে, সেই সময় শরীরের ইমিউন সিস্টেম একে শত্রু হিসেবে মেরে ফেলতে শুরু করে। এর সঙ্গে করোনা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনও নষ্ট হয়ে যায়।