পুবের কলম প্রতিবেদক: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতা ও এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের মুখ আনিস খানের মৃত্যুর মামলায় সিটের তদন্তের উপরই আস্থা রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআই তদন্তের দাবিতে করা মামলায় মঙ্গলবার এমনই রায় দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। অন্যদিকে ডিভিশন বেঞ্চ বা উচ্চতর আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছে আনিসের পরিবার।
এ দিন কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট আনিস খান মৃত্যুর তদন্ত করবে। তারপর আদালতে চার্জশিট জমা দেবে। বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়েছেন, আনিস খান মৃত্যু মামলার তদন্ত সিবিআই-এর হাতে হস্তান্তরের প্রশ্ন নেই। এর আগে মামলার শুনানিতে বারবার রাজ্য পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আনিস খানের বাবার আইনজীবীরা। তাঁরা বারবার দাবি করে এসেছেন রাজ্য পুলিশের বদলে নিরপেক্ষ কোনও সংস্থার মাধ্যমে যাতে তদন্ত করা হয়।
তবে মঙ্গলবার বিচারপতি রাজশেখর মান্থা তাঁর নির্দেশে বলেন, সব পক্ষের দেওয়া সমস্ত তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখার পর আদালতের মনে হয়েছে সিট ঠিকঠাক তদন্তই করছে। সিট তদন্ত করে চার্জশিট দেবে আদালতে। সিবিআই তদন্ত করার প্রয়োজন নেই।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রনেতা আনিস খানের বাড়িতে হানা হাওড়ার আমতা থানার পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশের লোকজন আনিসকে বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে। আনিস খানের আস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।
আদালতে মামলাকারীদের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, পুলিশের সামনে আনিস খানের মৃত্যু হলেও পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে পালিয়েছিল। পাশাপাশি আনিস খানকে পুলিশ পেছন থেকে ঠেলে দিয়েছিল বলেও অভিযোগ করা হয়। যদিও রাজ্যের তরফে সমস্ত অভোযোগকে অস্বীকার করা হয়।
অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে উল্লেখ করেছেন, পলিগ্রাফ টেস্টের রিপোর্ট দেখিয়েছি আমরা। দিল্লির ফরেনসিক দল পলিগ্রাফ টেস্ট করেছিল। ঠেলে ফেলা হয়েছে কি না সেটা জানার জন্য পলিগ্রাফ টেস্ট হয়েছে। ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব এখানে কোনও ভাবেই প্রমাণ করা সম্ভব নয়। তিনি দাবি করেন, আনিস খানের মৃত্যু নিয়ে পুলিশের যোগ প্রমাণিত নয়।
আনিস খানের বাবা সালেম খান ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে কোথাও তাঁর ছেলের মৃত্যুতে ষড়যন্ত্র বা খুনের কথা উল্লেখ করেননি। অনেকদিন আগেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল। মঙ্গলবার রায় দিল আদালত।
এ দিকে আদালতের রায়ে অখুশি আনিস খানের পরিবার। তারা উচ্চতর আদালতে যেতে পারেন বলে খবর। তার জন্য আইনি দিক খতিয়ে দেখছেন বলে জানা গিয়েছে। আদালতের রায়ের কপি হাতে পেলেই ডিভিশন বেঞ্চ বা উচ্চতর আদালতে যেতে পারে আনিসের পরিবার।