মাওলানা আবদুল মান্নানঃ মহামারির কারণে এ বছরের রমযান একেবারেই ভিন্ন রকমের। মসজিদে গিয়ে তারাবিহ্ না পড়ার কষ্ট, ক্বদরের রাতে মসজিদে অবস্থান করে রাত জাগরণ না করার মনোবেদনার মধ্যে দিয়ে অতিক্রান্ত হতে চলেছে রমযানের নাজাত পর্বের শেষ দিন। ঈদের নামাযও আমাদের বাড়িতেই আদায় করতে হবে, এটা বড় কঠোর, বড় বেদনার। ইফতারীর পরেই শওয়ালের চাঁদ বয়ে আনবে খুশির ঈদ। খুশির আনন্দে যেন আমরা ভেসে না যাই। মুসলমানের প্রতিটি মুহূর্ত বিশেষ করে ঈদের রাতের (চাঁদ রাত) ফযীলত অনেক বেশি। কাঙ্খিত বস্তুকে বহু কষ্ট সাধনার পর যখন অর্জন করা হয়, তখন আনন্দ-উৎসবে গা না ভাসিয়ে বরং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য আল্লাহর স্মরণে দেহ-মনকে সমর্পিত করাই হবে সিয়াম সাধকের অভীষ্ট লক্ষ্য। আবু আহমাদ মাররার ইবনে হামুবিয়া রা. আবু উমামা রা.-র সূত্রে বর্ণনা করেছেন, নবী কারীম সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ইবাদত-বন্দেগী করে, তার অন্তর ওইদিন মরবে না যেদিন সমস্ত অন্তর সমূহ মরে যাবে।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ)
আল্লাহর রাসূল সা. মুসলিম উম্মাহ্কে দু’টি খুশির দিন উপহার দিয়েছেন, আর তার আগে রাতকে, আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য তাগিদ করেছেন। অনর্থক আনন্দ-উল্লাসে এই দুই পবিত্র রাতকে উদ্যাপন করা অপেক্ষা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের পথে হাঁটা অনেক অনেক শ্রেয়।
দীর্ঘ এক মাস সংযম সাধনার পর মুসলিম যুব সমাজ, যেভাবে এ দুই রাতকে উদ্যাপন করে, তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করে, আল্লামা ইকবাল বলেছেন, রীতি-নীতি তব ঈসায়ীসম/ বি-ধর্মী তো তুমি সভ্যতায়/ এরা কী তবে সেই মুসলিম/ যারে ইহুদী দেখেও লজ্জা পায়।
আসুন! সংযম সাধনার শেষ রজনী আমাদের সংযমেই উদ্যাপিত হোক। আমীন!