পুবের কলম প্রতিবেদক: ইন্তেকাল করলেন মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন নেতা আলহাজ মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। গত ২৭ এপ্রিল কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি…)। এক বছর আগে তাঁর স্ত্রী ইন্তেকাল করেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। শহিদুল ইসলাম মাদ্রাসার ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন, মূলত তাঁর আন্দোলন ও নেতৃত্বেই পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা বোর্ড গঠিত হয়।
১৯৭১ সালে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়ন তৈরি করা হয় তাঁর উদ্যোগে। তাঁর প্রচেষ্টায় ১৯৭২ সালে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ গঠিত হয়। আলিয়া মাদ্রাসা ও মাওলানা আজাদ কলেজে একজন লড়াকু ছাত্রনেতা ছিলেন। তাঁর আপসহীন লড়াই আন্দোলন এবং তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা বোর্ড গঠিত হয়। শুধু তাই নয়, রাজ্যজুড়ে মাদ্রাসা সরকারি অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রেও শহিদুল ইসলামের অবদান স্বীকার করতেই হবে।
একটা সময় তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যুব কংগ্রেসের নেতা ছিলেন, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছের মানুষ বলে পরিচিত ছিলেন। তবে পরবর্তীকালে তিনি রাজনীতি থেকে সরে আসেন এবং বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হন।
মিল্লাত এবং সমাজের উন্নয়নের জন্য তিনি নীরবে কাজ করে গেছেন। বাংলার মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন শহিদুল ইসলাম এই বাংলার ইতিহাসে থেকে যাবেন। তাঁর শুভানুধ্যায়ীরা জানান, শহিদুল ইসলামের বড় গুন ছিল তিনি কথা দিলে কথা রাখতেন।
গত রবিবার অর্থাৎ ২৬ এপ্রিল ইফতার করার পর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তারপর তাকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৭ এপ্রিল ইন্তেকাল করেন তিনি। তার মৃত্যুর খবরে রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তাঁর জন্মভিটা বাদুড়িয়ার জসাইকটি গ্রামে জানাযার নামায এবং দাফন সম্পন্ন হয়েছে ২৭ এপ্রিল রাতে। তাঁর রূহে মাগফিরাতের জন্য সকলের কাছে দোয়ার আবেদন জানিয়েছেন তাঁর পরিবার।