পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: এক সময়ে হিন্দি ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, এক রাষ্ট্র, এক ভাষা হোক ভারতে। আর সেই ভাষা হোক হিন্দি। অমিত শাহ সেদিন আরও বলেছিলেন, দেশের একটি জাতীয় ভাষার প্রয়োজন। যে ভাষাটিকে বিশ্ব স্বীকৃতি দেবে ভারতীয় ভাষা হিসেবে। আর যদি কোনও ভাষা দেশকে একসূত্রে বাঁধতে পারে, তবে সেটি হবে হিন্দি’। এবার ‘হিন্দি ভাষা’ নিয়ে অমিত শাহের করা মন্তব্যের বিরুদ্ধেই হাঁটলেন তামিলনাড়ুর বিজেপি নেতারা।
তামিলনাড়ুর বিজেপি নেতা, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণণ, রাজ্য বিজেপির প্রধান কে আন্নামালাইও এই নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তাদের সঙ্গে সরব হয়েছেন তামিলনাড়ু রাজ্যের অন্যান্য নেতারাও।
রাজ্য বিজেপির প্রধান কে আন্নামালাই জানিয়েছেন, তাঁর দল তামিলনাড়ুর জনগণের ওপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়াকে মেনে নেবে না।
নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করার জন্য হিন্দি শিখতেই হবে এমন কোনও কথা নেই বলেও সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা। তাঁদের মতে প্রাচীন তামিল ভাষা জাতীয় সংযোগরক্ষাকারী ভাষা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে।
দ্রাবিড় সংস্কৃতির এই কেন্দ্রস্থলে ক্ষমতাসীন ডিএমকে এবং বিরোধী এআইএডিএমকে হিন্দি বা সংস্কৃতের বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে একই অবস্থান নিয়েছে।
কে আন্নামালাই বলেন, নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করার জন্য, হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক করা হতে পারে না। কর্মসংস্থান বা জীবিকার সমস্যার ক্ষেত্রে হিন্দি ভাষা শেখা যেতেই পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও আশা করেছিলেন যে সবাই তাঁদের আঞ্চলিক ভাষা শিখবে।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণণের দাবি, ‘কোনও ভাষাকে ঘৃণা করার দরকার নেই, তবে হিন্দি বা কোনও ভাষা দিয়ে তামিলকে প্রতিস্থাপন করা গ্রহণযোগ্য নয়।’
পন রাধাকৃষ্ণণ আরও বলেন, একসময় প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছিলেন (২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি) যে তামিল সবচেয়ে প্রাচীন ভাষা এবং এটি সংস্কৃতের চেয়েও পুরনো এবং সুন্দর।
কে আন্নামালাই বলেন, কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষা নীতিতে হিন্দি ঐচ্ছিক বিষয়। কেউ যে কোনও আঞ্চলিক ভাষায় পড়াশোনা করতে পারে। তবে আমাদের সবচেয়ে বড় গর্ব হবে যখন তামিলকে দেশের সংযোগরক্ষাকারী ভাষা হিসেবে গণ্য করা হবে।
প্রাক্তন আইপিএস অফিসারের বক্তব্য, আমি হিন্দি জানি না। এখানে আমাদের মধ্যে কতজন সেই ভাষা জানে, তাও বলতে পারব না। আমরা শিক্ষা, চাকরির প্রয়োজনে হিন্দি শিখতেই পারি, তবে সেটা কারুর ওপরে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কারু নাগরাজনের কথায়, আমাদের মাতৃভাষা এবং আমরা ভাষার ইস্যুতে আপস করতে পারি না। তবে কোনও ভাষা শেখার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই।