পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ডবল ইঞ্জিন সরকার অসমে সকলের বিকাশ ঘটাচ্ছে কতটা, তার জঘন্য নজির দেখা দিল অসমে। খাদ্যের অভাবে, মানুষ বুনো মাশরুম খেতে বাধ্য হচ্ছে, আর তাতেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু। বিষাক্ত মাশরুম খেয়ে অসমে দু’দিনে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরও ২২ জন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্চা লড়ছে হাসপাতালের বেডে শুয়ে। অসুস্থদের বেশিরভাগেরই শরীরের অবস্থা যথেষ্ট সংকটজনক। এরা সকলেই চা জনগোষ্ঠীর। মৃত ও অসুস্থদের বাড়ি উজান অসমের চড়াইদেও, ডিব্রুগড়, শিবসাগর ও তিনসুকিয়া জেলায়। বিষাক্ত মাশরুম খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে ৩৫ জনকে ডিব্রুগড় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অসুস্থ ২২ জনকে গুয়াহাটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, খাদ্যের অভাবে চা জনগোষ্ঠীর মানুষ কেটে ফেলা পচন ধরা গাছের গুঁড়িতে ফোটা মাশরুম খেয়ে কোনওরকমে জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। গত ৭ এপ্রিল চড়াইদেও জেলার সোনারি মহকুমার লালতিপথার গ্রামের রিমা কর্মকারের পরিবার জংলি মাশরুম বা ব্যাঙের ছাতা রান্না করে খান। সেদিন রাতেই পরিবারের সকলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরদিন অসুস্থদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু অবস্থা সংকটজনক দেখে তাদের অসম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ১১ এপ্রিল সকালে রিমার ছেলে এবং মেয়ের মৃত্যু হয়। ওইদিন বিকেলে রিমা ও তাঁর নিকটাত্মিয়ের মৃত্যু ঘটে। মঙ্গলবার একই গ্রামের আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। এরপর হাসপাতালে আরও ৬ জনের মৃত্যুর খবর মেলে। একই পরিবারের দুই-তিনজন করে, আবার কোনও পরিবারের সকলেই মারা গিয়েছে বিষাক্ত মাশরুম খেয়ে।
সিপিআইএম ডিব্রুগড়, জেলা নেতা প্রণব শইকিয়ার অভিযোগ, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য অসমের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। বহু পরিবার জঙ্গলের লতাপাতা খাচ্ছেন। পচন ধরা গাছের ফুল বা মাশরুম খাচ্ছেন। রাজ্যের চা বাগান এলাকাগুলিতে অভাবের ছবি প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। বহু বাগান বন্ধ। যেগুলি চলছে, সেখানে শ্রমিকরা নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। অথচ এই অভাবদীর্ণ মানুষের পাশে নেই সরকার। হাসপাতালগুলিতেও নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা। এসব নিযে সরকারের কোনও মাথাব্যথাও নেই।