বছর তিনেক হল হঠাৎই বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলছেন– নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর কার্যকলাপ ও মতাদর্শে তাঁরা নাকি বিশ্বাস করেন। তাঁকে বিজেপি দলের একজন আইকন হিসেবেও প্রচার করতে শুরু করেছেন। বিজেপির হঠাৎই নেতাজি প্রেম বিভিন্ন মহলে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। অনেকে বলছেন– নেতাজির ভাবমূর্তিকে তাঁরা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছেন। এ সম্পর্কে নেতাজি বিশেষজ্ঞ ও তাঁর প্রপৌত্র অধ্যাপক ড. সুগত বসুর এক সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাংবাদিক করণ থাপার। সাক্ষাৎকারটি তরজমা করেছেন অর্পিতা লাহিড়ী।
করণ থাপার ঃ ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির স্ট্যাচু বসানো হল– কিন্তু এই অবিসংবাদী নেতা বড় দেরিতে পেলেন প্রাপ্য সন্মান। কী বলতে চান এই প্রসঙ্গে?
সুগত বসু ঃ হ্যাঁ দেরিতে হলেও নেতাজি তাঁর প্রাপ্য সম্মান পেলেন। আসলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এমন একজন ব্যক্তিত্ব— যাকে শুধু কোনও স্মৃতিস্তম্ভ বা স্মারক দিয়ে বিচার করা যায় না। যিনি নিজের পুরো জীবনটি ব্রিটিশ উপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছেন। আপনি আমার থেকে জানতে চাইছেন— নেতাজির প্রতি মোদি সরকারের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে– আমি আপনাকে এই কথাটাই বলতে চাইব নেতাজি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে লড়াই করেছিলেন– তাঁর যে মূল্যবোধ– আদর্শ— তার প্রতি যথাযথ সন্মান জানালে সেটাই হবে নেতাজির প্রতি সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধা নিবেদন।
নেতাজি ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য লড়াই করা একমাত্র নেতা– যিনি হিন্দু-মুসলিম-শিখ-খ্রিস্টান— সকল সম্প্রদায়ের সমানাধিকারের জন্য সদা সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। এই প্রসঙ্গে বলতে গেলে স্বভাবতই যেটি চলে আসে— তা হল সংখ্যালঘু প্রসঙ্গ। নেতাজি কিন্তু বারংবার সংখ্যালঘুদের অধিকার সুনিশ্চিত করার কথা বলেছেন। অথচ আজকের ভারতের দিকে তাকিয়ে দেখুন– কীভাবে নিষ্পেষিত হচ্ছেন তাঁরা। বিদ্বেষ-ভাষণ যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এই সমসাময়িক সময়ে আমি তার তীব্র বিরোধিতা করি।
থাপার ঃ উত্তরপ্রদেশের হিন্দুত্ববাদী নেতারা সাফ বলছেন ১২০০ সাল কা গুলামি– এমনকিও যোগী আদিত্যনাথ প্রকাশ্যে মুঘল শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক শধ প্রয়োগ করছেন। নেতাজি জীবনে দু’জন মুঘল সম্রাটকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন– আপনি কি মনে করেন এটা সত্যিই গোলামি ছিল?
বসু ঃ না– আমি তা একেবারেই মনে করি না। বরং নেতাজি তাঁর একাধিক ভাষণে বলেছেন— মুসলিম শাসকদের সংগ্রাম ব্রিটিশ শাসনের ভিত টলিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। ভুলে গেলে চলবে না– সুভাষ যে ‘দিল্লি চলো’র কথা বলেছিলেন– ঐতিহাসিক লালকেল্লায় পতাকা তোলা— কেন সুভাষ লালকেল্লায় পতাকা তুলেছিলেন? কারণ তিনি মনে করতেন– লালকেল্লা হল ঐক্যের প্রতীক। তাও কিন্তু সেই পুরনো দিল্লি। যা মুসলিম শাসকদের শাসন ক্ষেত্র ছিল।
১৯৪৩-র সেপ্টেম্বরে নেতাজি তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনাদের নিয়ে কুচকাওয়াজ করলেন শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের সমাধির সামনে। কুচকাওয়াজ থেকে আওয়াজ উঠল ‘জয় হিন্দ– দিল্লি চলো’। দেখুন– নেতাজি মুঘল সম্রাট আকবরকে বিশেষ শ্রদ্ধা করতেন। আকবর ছিলেন এমন একজন মুঘল সম্রাট যিনি সেই সময়ে দাঁড়িয়েও হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের জয়গান গেয়েছিলেন।
শুধু তাই নয়– আজাদ হিন্দ ফৌজে কিন্তু মুসলিম ও খ্রিস্টান সৈনিকরা পর্যাপ্ত সংখ্যাতেই ছিলেন। দেখুন– আমার বাবা শিশির কুমার বসু যখন কলকাতা থেকে গোমোর উদ্দেশ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন– তখন তাঁকে পেশোয়ারে স্বাগত জানান মিঞা আকবর শাহ। উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন এই মিঞা আকবর শাহ।
আবার– ১৯৪৩ সালে নেতাজির সাবমেরিন যাত্রায় একমাত্র ভারতীয় সঙ্গী ছিলেন আবিদ হাসান। আইএনএ-এর ফার্স্ট কমান্ডার ছিলেন মুহম্মদ জামান কিয়ানি। আমরা ভুলতে পারি না শওকত মালিককে– যিনি ইম্ফলের মৈরাংয়ে প্রথম ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা তুলেছিলেন। ট্র্যাজিক সেই বিমানযাত্রায় নেতাজির সঙ্গী ছিলেন হাবিবুর রহমান।
আইএনএ-তে ছিলেন একজন খ্রিস্টান অফিসার জন স্ট্রেসি– যিনি সিঙ্গাপুরে আইএনএ-এর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছিলেন। ১৯৪৫-র ১৫ আগস্ট ব্রিটিশরা তখনও সিঙ্গাপুরে ঢোকেনি– তখন আইএনএ-এর হয়ে স্ট্রেসি তাঁর সংগ্রাম জারি রেখেছিলেন।
থাপার ঃ নেতাজি তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ‘An Indian Pilgrim’éôé বলেছেন— ব্রিটিশরা চেয়েছিলেন উপনিবেশিক শক্তির প্রচার ও প্রসার। কিন্তু মুঘলরা এদেশের মাটিকে নিজেদের বলে মনে করেছিলেন। কী বলতে চান এই প্রসঙ্গে?
বসু ঃ হ্যাঁ– যথার্থই বলেছেন। নেতাজি তাঁর অসমাপ্ত জীবনীতে এই কথা তুলে ধরেছিলেন। নেতাজি কোনওদিনই হিন্দু-মুসলিম— এই শ্রেণি বিভাজন করেননি। যেমন ভাবে মুঘলরা এই দেশের মানুষ– মাটিকে আপন করে নিয়েছিলেন।
থাপার ঃ ‘ইত্তেহাদ’– ‘ইদমাদ’ এবং ‘কুরবানি’ এই তিনটি উর্দু শব্দ ছিল টিপু সুলতানের বাহিনীর মূল মন্ত্র। নেতাজি যখন আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন করেন তখন তিনিও এই এই আদর্শে আস্থাশীল ছিলেন। কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে— যেভাবে একের পর এক মুঘলসরাই– এলহাবাদের মতো ঐতিহাসিক শহরের নাম পরিবর্তন করছেন তা কি নেতাজির দৃষ্টিভঙ্গি মোতাবেক আদৌ প্রাসঙ্গিক?
বসু ঃ দেখুন নেতাজি ব্রিটিশ উপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াইয়ের জন্য যে-দু’জন মুসলিম শাসককে শ্রদ্ধা করতেন তাঁদের মধ্যে একজন হলেন— টিপু সুলতান– অপরজন সিরাজ-উদ্-দৌলা। ১৯২০ সালের ২১ অক্টোবর তিনি নাম করে বলেছিলেন টিপু সুলতান এবং নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলার কথা। যাঁরা হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলেছিলেন। আইএনএ-এর ইউনিফর্ম– বাহিনীর শৃঙ্খলা সব কিছুতেই টিপু সুলতানের প্রভাব ছিল প্রচ্ছন্ন। নেতাজি যে ত্রিবর্ণ পতাকা উত্তোলন করেছিলেন— তার মাঝখানে ছিল চরকা। অবশ্যই সেটি মহাত্মা গান্ধির অনুপ্রেরণায়। নেতাজি বিশ্বাস করতেন— ভারতীয় সংস্কৃতি হিন্দি এবং উর্দুর মিশেল। প্রেম সায়গল স্বতঃস্ফূর্ত উর্দু বলতে পারতেন।
নেতাজি বলেছিলেন ঃ ‘হাম জিন্দা রহে ইয়া মরে ও কোই বাত নেহি হ্যায়– সেহি বাত ইয়ে হ্যায়– এহম বাত ইয়ে হ্যায়– হিন্দুস্থান আজাদ হোগা।’ বক্তব্যের মাঝে উর্দু শধ ব্যবহার করার জন্য প্রেম সায়গলের কাছে জানতে চাইতেন নেতাজি। ‘হাম লালকেল্লে পর যাকে হামারে ভিকট্রি প্যারেড করেঙ্গে।’
থাপার ঃ জেনে আনন্দিত হলাম নেতাজির উর্দু শব্দতে কোনওরকম অ্যালার্জি ছিল না– তিনি নিজের বক্তব্যের মাঝেও উর্দু শব্দের প্রয়োগ করেছিলেন। একটা প্রশ্ন আপনাকে করতে চাই— হরিদ্বারে ধর্মসংসদ নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী একটাও শব্দ খরচ করেননি। আজ যদি নেতাজি থাকতেন— তা হলে পুরো বিষয়টি কীভাবে দেখতেন?
বসু ঃ দেখুন– ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা– বিদ্বেষমূলক ভাষণ কখনও বরদাস্ত করেননি তিনি। নেতাজির আদর্শ কোনওদিনও বলেনি পরধর্মকে অসম্মান করো। ঘৃণা ছড়িয়ে দাও। নেতাজির স্ট্যাচুর পাশাপাশি তাঁর আদর্শকে মান্যতা দেওয়ার দরকার।
থাপার ঃ ১৯৩৮ সালের ১৪ জুন নেতাজি কংগ্রেস সভাপতি থাকার সময় কমিউনালিজমের বিরুদ্ধে সরব হন। তৎকালীন সময়ে বেশ কিছু এই ধরনের সাম্প্রদায়িক সংগঠন ছিল— যাদের বিরুদ্ধে সরব হন নেতাজি। আজকের ভারতে দাঁড়িয়েও কি ঠিক একই ধরনের প্রবণতা দেখা দিচ্ছে না? একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রকে নির্দিষ্ট ধর্মের মোড়কে ঢাকার চেষ্টা করা হচ্ছে। কী বলবেন?
বসু ঃ দেখুন– নেতাজি নিজে একজন অ্যাধাত্মিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি হলেও তার বহিঃপ্রকাশ দেখাননি। এমনকি দক্ষিণশ্বরে ভবতারিণী মন্দিরে আমার বাবা শিশির কুমার বসুকে পাঠিয়েছিলেন মহানিষ্ক্রমণের আগে। সিঙ্গাপুরে চেট্টিয়া মন্দিরে প্রবেশ করেননি– সেইজন্য আবিদ হাসান তাঁকে বলেছিলেন ঃ ‘নেতাজি– আমরা একটা বড় অঙ্কের ডোনেশন চেট্টিয়াদের থেকে হাতছাড়া করলাম।’ মুহাম্মদ জামান কিয়ানি এবং আবিদ হাসান ছিলেন সেই সময় নেতাজির সঙ্গে। নেতাজির ভাষণে অপূর্ব এক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মূর্চ্ছনা ছিল। পরবর্তীতে আবিদ হাসান সেই কথা বলে গিয়েছেন।
থাপার ঃ আপনি চেট্টিয়া মন্দিরের কথা তুললেন– বললেন আইএনএ-তে মুসলিম প্রতিনিধিত্বের কথা– শেষযাত্রাতেও তাঁর সঙ্গী ছিলেন একজন মুসলিম। আমি এইখানে একটা কথা জানতে চাইব— ভারতের বর্তমান জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ¬ মুসলিম। কিন্তু মোদি মন্ত্রিসভায় মাত্র একজন মুসলিম মন্ত্রী। ১৯৮৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত একজনও মুসলিমকে গুজরাতের কোনও নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়নি। একটা সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল মুসলিম প্রতিনিধিত্ব ছাড়া নির্বাচনে— কীভাবে এটা সম্ভব?
বসু ঃ দেখুন– এটা গণতন্ত্রের জন্য খুব বিপদজনক একটা প্রবণতা। আমি যখন সাংসদ ছিলাম ষোড়শ লোকসভায়– এই প্রসঙ্গটা তুলেছিলাম। একটা দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে চুপ করিয়ে রাখা– সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানো কোনওমতেই কাম্য নয়। তা দেশের সুস্থ সংস্কৃতির পরিচয়ও বহন করে না। দেখুন– নেতাজির চিন্তাধারা ছিল এর একদম বিপরীত। তাঁর আজাদ হিন্দ সরকারে মুসলিম এবং শিখ প্রতিনিধিত্ব ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। নেতাজির সংখ্যালঘু সঙ্গীদের কথা তো আগেই বলেছি। প্রেম সায়গলের পর– ১৯৪৫-এ নেতাজির মিলিটারি সেক্রেটারি ছিলেন মেহেবুব আহমেদ। আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে ক্যামেরা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলাম। কারণ তিনি তাঁর অধিনায়কের জন্য অবিরাম অশ্রুপাত করে চলেছিলেন।
পরে আহমেদ বলেন– আমি এতটা আবেগপ্রবণ কেন জানেন– আমি মহাত্মা গান্ধি– জওহরলাল নেহরু-সহ অনেকের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু আমার কাছে নেতা একজনই– তিনি দেশনায়ক নেতাজি। আমি যার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত ছিলাম।
থাপার ঃ নেহরু-সুভাষের সম্পর্ক নিয়ে কী বলতে চাইবেন?
বসু ঃ দেখুন– জওহরলাল নেহরু ছিলেন নেতাজির কাছে বড় দাদা। ১৯২০ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত রাজনীতির সুবাদে তাঁরা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ১৯৩৯ সালে নেহরু কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গান্ধির মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করলেন। বাংলার প্রতিনিধি বোধহয় তাঁর পছন্দ ছিল না। দেখুন– বলতে দ্বিধা নেই— দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ– সেই সময়ের রাজনৈতিক অবস্থা অণুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন নেতাজি। দেশকে স্বাধীন করতে গঠন করলেন আজাদ হিন্দ ফৌজ। লালকেল্লায় যেদিন স্বাধীন ভারতের পতাকা উড়েছিল– সেদিন নেহরু দু’জনের কথা নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন— প্রথম জন অবশ্যই মহাত্মা গান্ধি আর দ্বিতীয় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।
থাপার ঃ নেতাজি ১৯৩৮ সালে কংগ্রেস সভাপতি থাকার সময় ‘প্ল্যানিং কমিটি’ গঠন করেছিলেন– স্বাধীনতার পর নেহরু যাকে প্ল্যানিং কমিশনে বদল করেন। নেতাজি অপেক্ষা করছিলেন নেহরুর ইউরোপ থেকে ফেরার জন্য– তারপরে ঘোষণা করা হবে জাতীয় প্ল্যানিং কমিশন। এই সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বলেন ঃ কংগ্রেসে সবথেকে আধুনিক দু’জন— নেহরু এবং নেতাজি। এহেন নেতাজিকে নিয়ে বরাবরই আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি ছিল গান্ধির– সেটা বলবেন।
বসু ঃ আমার বাবা শিশির কুমার বসু এবং মা কৃষ্ণা বসুর লেখা থেকে এই বিষয়ে অনেক তথ্য জানা যায়। গান্ধিজি এবং নেহরু— উভয়ে কলকাতায় এলে আমাদের বাড়িতেই থাকতেন। আমার পিতামহ শরৎচন্দ্র বসুর অতিথি হতেন নেহরু। উডবার্ন পার্কের সেই বাড়িতে ১৯৩৭ সালে কংগ্রেসের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক হয়। ১৯৪০-এ মুহাম্মদ আলি জিন্নাহকে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন নেতাজি (যদিও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন)। সাত বছর পর সেই প্রস্তাব ভাইসরয় মাউন্টব্যাটেনের নিকট উত্থাপন করেন গান্ধিজি। তবে নাথুরাম গডসের হাতে গান্ধিজির হত্যা দেশ এবং জাতির জন্য একটা কলঙ্কজনক অধ্যায়।