দেবশ্রী মজুমদার– শান্তিনিকেতন বৃহস্পতিবার প্রভাতফেরির মাধ্যমে ভুবন ডাঙার ডাকবাংলো মাঠে শুরু হয় পৌষ মেলা। মেলার দ্বারোদ্ঘাটন করেন রাজ্যের ক্ষুদ্র– মাঝারি ও বস্ত্র দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সবুজকলি সেন– বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বপন কুমার দত্ত– সুপ্রিয় ঠাকুর– মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা– সাংসদ অসিত মাল ও পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত প্রমুখ। প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
স্বাগত ভাষণ দেন মেলা কমিটির আহ্বায়ক মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রথম বক্তব্য রাখেন সুপ্রিয় ঠাকুর। সুচারু ভাবে সমগ্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হলেও– নাম না করে প্রায় সকলেই বিঁধলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে। সূত্রের খবর– আচার্যের ভাষণে উপাচার্য বলেন– তিন তিনবার রিমাইণ্ডার পাঠিয়েও রাজ্য সরকারের বিভাগীয় সচিব তাঁর চিঠির উত্তর দেননি। যেহেতু কোভিড প্রোটোকল রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে– তাই মেলা করতে পারেননি তিনি। তাই সকলের মতো তাঁর চোখেও জল। তাঁর অন্তরাত্মা কাঁদছে। যদিও উপাচার্যর বক্তব্য খণ্ডন করে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন– সর্বৈব মিথ্যা বলছেন উপাচার্য। তিনি উপাচার্যের পদের যোগ্য নন। অনেক আগেই তার মর্যাদা নষ্ট করেছেন। এছাড়াও মন্ত্রী বলেন– এর আগেও বিশ্বভারতী নিজেদের অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বলে বসন্ত উৎসব করতে পারবে না জানায়। সেই সময়ে শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের পক্ষ থেকে এক কোটি ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে বসন্ত উৎসবের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল– যদিও লকডাউন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় সে বসন্ত উৎসব আর হয়নি।
চন্দ্রনাথ বাবু আরও বলেন– মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যদি এই মেলায় সম্মতি না থাকতো– তাহলে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বোলপুরবাসী কিভাবে এত বড় মেলার আয়োজন করতে পারত। তাঁরাই উপাচার্যকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু উপাচার্য বা আচার্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কোন ব্যবস্থাই নেননি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে– অনুব্রত মণ্ডল বলেন– উপাচার্য পাগল। বোলপুর পুরসভা– এসএসডিএ তিনবার চিঠি দিয়েছে। এই মেলায় রাজ্য সরকার বিশ্বভারতীকে সাহায্য করে থাকে। মেলা করলেন না কেন? মিথ্যা কথা বলছেন উনি। রাজ্য সরকারকে কোনও চিঠিই উনি দেননি বলে দাবি তোলেন অনুব্রত। স্বভাবতই বলা যায় শান্তিনিকেতনের আশ্রমে পৌষ উৎসব এবং বোলপুরের ভুবন ডাঙার পৌষমেলাকে কেন্দ্র করে রাজ্য কেন্দ্র তরজা অব্যাহত। এব্যাপারে বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সবুজ কলি সেন বলেন– বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য রাজনীতির লোক। তাই রাজনীতির কথা বলেছেন। মেলা শুরু হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ী থেকে আপামর জনগণ। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখরিত থাকে মেলা চত্বর।