পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: প্রেম, বিয়ে, পরকীয়া! বর্তমান সময়ে এই তিন জিনিস একে অপরের পরিপূরক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ তো বটেই। এবার পরকীয়ার শিকার হচ্ছে পশু-পাখিরাও। মোট কথা এক প্রেমিকা, বা নারীতে আসক্ত নয় কোনও পুরুষই। সে মানুষ হোক বা পক্ষীকূল। বর্তমান সমাজে পরকীয়ার জেরে মানুষের ডিভোর্স তো হচ্ছেই, তবে জানেন কি নিকৃষ্ট এই কাজের জেরে পক্ষীকূলেও বেড়ে চলেছে অশান্তি। শুধু তাই নয়, তাদের মধ্যেও হু হু করে বেড়ে চলেছে ডিভোর্সের সংখ্যা।
‘একান্ত আমার’ শব্দদ্বয়ে বিশ্বাসী পক্ষীকূলের একাংশ। আমার প্রিয়তমা বা প্রিয়তম অন্য কারোর পাশে বসে থাকা তো দূর কি বাত কারোর দিকে তাকাতেও পারবে না। এমনটাই বিশ্বাস পক্ষী সমাজের। শুনতে অবাক লাগলেও এক গবেষণায়, পাখিদের নিয়ে এমন
তথ্য সামনে এনেছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকরা বলছেন, পাখিদের এই ভিভোর্স মানুষের সংসার ভাঙার মতো নয়। বরং পাখিদের সংসার ভাঙার এই প্রক্রিয়ায় রয়েছে টুইস্ট।
আসলে বিষয়টি হল, দীর্ঘ সময় আলাদা থাকা ও একাধিক যৌন সম্পর্কের কারণে পাখিদের মধ্যে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। অন্তত এক প্রজনন মৌসুম পর্যন্ত ৯০ শতাংশ প্রজাতির পাখির একক সঙ্গী থাকে। তবে এক সঙ্গীতে অভ্যস্ত কিছু পাখি তাদের আসল সঙ্গী জীবিত থাকা সত্ত্বেও পরবর্তী প্রজনন মৌসুমের জন্য অন্য সঙ্গীর কাছে চলে যায়। পাখিদের এমন আচরণকে বিচ্ছেদ বলছেন গবেষকেরা। দীর্ঘ অদেখা, দূরত্বের অজুহাত বা একঘেয়েমির বাহানায় পরকীয়ায় ঝুঁকে পড়া এসব পুরুষ পাখির কারণেই সাজানো সংসার ভেঙে খানখান হয়ে যাচ্ছে পক্ষীকুলে। বাড়ছে ‘অকাল বিচ্ছেদ’।
গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ হারের বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে পুরুষ পাখিদের একাধিক যৌনসঙ্গী থাকার প্রভাব আছে। তবে স্ত্রী পাখিদের একাধিক যৌনসঙ্গী থাকলে এ ক্ষেত্রে ততটা ইস্যু ক্রিয়েট করে না পুরুষ সঙ্গীরা।
তবে পরিযায়ী পাখিদের ক্ষেত্রে বিচ্ছেদের হার কিছুটা কম। কারণ বছরের একটি সময় তাদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। এ সময় বয়সজনিত কারণে সঙ্গীর মৃত্যু হলে বা অন্য কোনো কারণে সঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে, তবেই ঘটে বিচ্ছেদ।
সম্পর্কের সমীকরণ বদলে গেলে আলাদা পথ বেছে নেন অনেক দম্পতি। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা না থাকলে, ভালবাসা বা বিশ্বাসের অভাব হলে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তারা। পশু, পাখিদের মধ্যেও যে এমন মান-অভিমানের পালা চলে, তাদের সম্পর্কেও যে ‘বিচ্ছেদ’ শব্দের অস্তিত্ব রয়েছে, সেটাই এই গবেষণায় উঠে এসেছে। তবে পাখিদের এই বিচ্ছেদ পরিবেশ-প্রকৃতির ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা, তা অদূর ভবিষ্যতেই জানা যাবে।