ইনামুল হক, বসিরহাট: এবছরের মাদ্রাসা পর্ষদের ফাজিল পরীক্ষার ফলাফলে জোড়া চমক বসিরহাট আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার। এই মাদ্রাসার দুই ছাত্র প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে রাজ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে। রাজ্যে-ফাজিলে প্রথম সাইদুল সাঁপুই প্রাপ্ত নম্বর ৫৫৯ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে মোস্তাফিজুর রহমান প্রাপ্ত নম্বর ৫৫৭। মাদ্রাসার এই সাফল্য খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শিক্ষার্থীরা। সাইদুল সাঁপুই এর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙ্গড় থানার ঘুংড়ী শাকশহর গ্রামে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৫৫৯ বাংলায় ৯২, ইংরেজিতে ৯১ আরবিতে ৯৩, থিওলজি ৯৬, ইসলামিক হিস্ট্রি ৯৭, ও ইসলামিক স্টাডিজে পেয়েছে ৯০ অপশনাল সাবজেক্ট এডুকেশনে প্রাপ্ত নম্বর ৮৫। অন্যদিকে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে এই মাদ্রাসারই ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশিপুর থানার শ্যামনগর গ্রামে। মোস্তাফিজুরের প্রাপ্ত নম্বর ৫ ৫৭ বাংলায় ৯২ ইংরেজিতে ৯১ আরবিতে ৯২ থিওলজি ৯৪ ইসলামিক হিস্টরিতে ৯৭ ইসলামিক স্টাডি তে ৯১ অপশনাল সাবজেক্ট এডুকেশন এ প্রাপ্ত নম্বর ৬৪।
বলাবাহুল্য, দুজনেই অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সাইদুলের আব্বা মোহাম্মদ সৈয়েদ আলী সাঁপুই। রিক্সা চালান। আর মোস্তাফিজুরের আব্বা মোহাম্মদ বাকীবিল্লাহ। তার পরিবার কৃষি নির্ভর। দুজনেই একইসঙ্গে বসিরহাট আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা আলিম পরীক্ষা দিয়ে ছিল। এবছর এই মাদ্রাসা থেকেই ফাজিলে নজর কাড়া সাফল্য অর্জন করে সাড়া ফেলে দিয়েছে দুই পড়ুয়া। তারা জানায়, তারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এখানে পড়াশোনা করলেও আবাসিকভাবে থাকতো দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙ্গড়ের পূর্ব কাঁঠালিয়া মাদ্রাসা মাসুমিয়াতে। সেখানকার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জহুর মোজাদ্দেদী সাহেব সহ অন্য শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নিয়মানুবর্তিতা ও অধ্যাবসায়ের মধ্যে থেকে পড়াশোনা করতো। পাশাপাশি এই সাফল্যের জন্য বিশেষ অবদান রয়েছে তাদের গৃহশিক্ষক মোহাম্মদ ইমরান কারীমের। দুজনেই প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা নিজেদের মতো পড়াশোনার বাইরেও ইমরান কারীমের প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও সহায়তা পেয়েছে। সাইদুল ও মোস্তাফিজুররা জানায়, বসিরহাট আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার সুপার সহিদুল ইসলাম সাহেবও তাদের সব সময় উৎসাহ যুগিয়েছেন। সাইদুল সাঁপুই ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে একজন হাকিকাতে আলেম হতে চায়। আর মোস্তাফিজুর এর ইচ্ছা আরবি ভাষাও সাহিত্যে গবেষণা করার। শুক্রবার ফল প্রকাশের পরেই দুজনেই চলে আসে বসিরহাট আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায়। মাদ্রাসা সুপার সহিদুল ইসলাম , শিক্ষক মুহাম্মদ বাকীবিল্লাহসহ অন্যান্য শিক্ষকরা তাদের এই সাফল্যের জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা ও মিষ্টি মুখ করান। সুপার সহিদুল ইসলাম জানান, তাদের এই সাফল্য ঐতিহ্যবাহী বসিরহাট আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার মুকুটে দুটি নতুন পালক শোভা পেল। আমি তাদের পরবর্তী শিক্ষাজীবনের আরো শ্রী বৃদ্ধি কামনা করি।