নয়াদিল্লি, ৩ মার্চ: লোকসভা নির্বাচনে মোদি সরকারের ভূমিকাকে তুলোধোনা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ইচ্ছামতো ব্যবহার করে ‘ম্যাচ ফিক্সিং’-এর অভিযোগও তোলেন তিনি। এবার রাহুলের সুরেই সুর মিলিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করল দেশের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনাররা। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করলেন দেশের তিন প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার।
প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি বলেন, ‘‘ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, যা চলছে তাতে কমিশন হস্তক্ষেপ করতে পারে। এই সমস্ত প্রক্রিয়া ভোট পর্যন্ত স্থগিত রাখতে পারে। কারণ এতে প্রভাব পড়তে বাধ্য। নির্বাচন কমিশনের নীতি বলছে, যা আমরাও মেনে চলে এসেছি, যদি কিছু পরে হতে দেওয়া যায়, তাহলে তা পরেই হোক। পিছিয়ে দিলে কোনও বড় ক্ষতি হয়ে যাবে, এমনটা নয়। তিন মাস পরও হতে পারে।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য, ‘‘ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন এজেন্সিগুলির এই তৎপরতায় ভোটের ময়দানে সব দলকে সমান সুযোগ দেওয়ার নীতি বিঘ্নিত হচ্ছে। তা যাতে না হয় তা নিশ্চিত করা কমিশনেরই কাজ।’’ কমিশনারদের দাবি, ‘‘আমরা যখন কমিশনে ছিলাম, তখন এমন পরিস্থিতি কখনও তৈরি হয়নি। ভোটের সময় কমিশনকে যে কাজটি নিষ্ঠার সঙ্গে করতে হয়, তা হল সব দলের জন্য উন্মুক্ত পরিবেশ তৈরি রাখা। কমিশনের তৎপরতায় তা বিঘ্নিত হচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, গত রবিবার (৩১মার্চ) দিল্লির রামলীলা ময়দানে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া জোটের সভা থেকে রাহুল গান্ধি বলেছিলেন, ‘সামনেই লোকসভা ভোট, নির্বাচন কমিশনার মোদিজি ঠিক করেছেন, খেলা শুরু আগেই আমাদের দুই নেতা কেজরিওয়াল ও হেমন্ত সোরেনকে জেলবন্দি করেছেন। দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধীদল কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছেন। এই নির্বাচনে মোদি সরকার ম্যাচ ফিক্সিং-এর চেষ্টা করছে।’ তাঁর কথায়, ‘বিজেপি ৪০০ সিটের স্বপ্ন দেখছে। যদি ম্যাচ ফিক্সিং না হয়, বিজেপি ১৮০ সিট পার করতে পারবে না।’
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে নতুন দুই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এক কমিটি। যে কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও লোকসভার সবথেকে বড় বিরোধী দলের নেতা অধীর চৌধুরী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ছিলেন। এই নয়া নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ঘটনাকে কটাক্ষ করেই এই মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধি।