পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: নাগরিক সংশোধনী আইন বা ক্যা চালু করা নিয়ে কেন্দ্র সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরদিনই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাল ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ। কেরলের এই মুসলিম সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাল অবিলম্বে এই নাগরিক সংশোধনী আইন বাস্তবায়নে স্থগিতাদেশ দিতে হবে। সেই সঙ্গে বাতিল করতে হবে ধর্মীয় বিভাজনকারী এই আইন। উল্লেখ্য ক্যা সংসদে পেশ হয় ২০১৯ সালে।
আর তখনই এই আইন বাতিলের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আসে মুসলিম লিগ। শীর্ষ আদালত এই মামলা গ্রহণ করে এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিশ পাঠিয়ে ছিল সেই সময়। আদালতের কাছে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল যেহেতু এই আইন নিয়ে কোনও রুল গঠন করা হয়নি তাই এই আইন বাস্তবায়ন এখন হচ্ছে না। তাই এই আইনে স্থগিতাদেশ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। মুসলিম লিগের মামলা ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে।
কিন্তু এবার যখন রুল তৈরি হয়েছে এবং সেই আইন বাস্তবায়নের জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে তাই মুসলিম লিগ পুনরায় সুপ্রিমকোর্টের নজরে আনল কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা। শুধু স্থগিতাদেশ নয়, দাবি জানান সম্পূর্ণ বাতিল করে দিতে হবে এই নাগরিক সংশোধনীয় আইন। কেননা এই আইন ধর্মীয় বিদ্বেষ প্রসূত। ভারতীয় সংবিধানে রয়েছে কোন ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য বিভেদের শিকার করা যাবে না।
সংবিধানের ধারা ১৪ এবং ১৫ অনুযায়ী রাষ্ট্র কখনই ধর্মীয় পরিচয় বিচার করে কাউকে অন্যায় ভাবে সুবিধা পাইয়ে দিতে পারে না। অথচ এই সংশোধনী আইনে বলা হয়েছে বাংলাদেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আগত অমুসলিম শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। এখানে মুসলিমদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে যারা দেশে বসবাস করছেন বিদেশ থেকে এসে, তাদের মধ্যে ধর্মীয় বিভাজন রেখা টেনে দেওয়া হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় সংবিধান বিরোধী। উল্লেখ্য প্রস্তাবিত এই আইন নিয়ে সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বিশেষ করে অসম সহ উত্তর পূর্ব অঞ্চলে তীব্র প্রতিবাদ হয়। এই সব রাজ্যগুলির ভয় বিদেশি নাগরিক নিয়ে এসে তাদের জনবিন্যাস পাল্টে দেওয়ার কৌশল রচনা করা হয়েছে। তাছাড়া নতুন করে নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট নেওয়ার নীতি চালু হলে হয়রানি শুরু হয়ে যাবে।
ইতিমধ্যে লাখ লাখ মানুষ অসমে ডি-ভোটার হয়ে পড়েছেন। বহু নাগরিককে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে ঘরবাড়ি বিক্রি করে আদালতে ছুটতে হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষদের ভয় অসমের মত সব রাজ্যেই হয়রানির মধ্যে পড়বেন লাখো লাখো মানুষ। গতকাল বিজ্ঞপ্তিজারি হওয়ার পরই দ্রুতগতিতে শুরু হয়ে গেছে বিদেশ থেকে আগতদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া।