মোল্লা জসিমউদ্দিন: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে উঠে পুলিশি অনুমতি বিষয়ক মামলা। আগামী ১০ মার্চ তৃণমূলের ব্রিগেডের দিনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সন্দেশখালিতে সভা করার অনুমতি দিল হাইকোর্ট। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘আগামী ১০ মার্চ অর্থাত্ রবিবার সন্দেশখালিতে সভা করতে পারবেন বিরোধী দলনেতা। তবে কোনও ভাবেই উস্কানিমূলক মন্তব্য করা যাবেনা, কোনও কটূক্তি বা কোনও কুরুচিকর মন্তব্য করা যাবে না’।
তবে সভাস্থল পরিবর্তন করে ন্যাজাটের দক্ষিণ আক্রাতলায় শুভেন্দু সভা করতে পারেন বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি সেনগুপ্তের বেঞ্চ। ওইদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সভা করার অনুমতি দিয়েছে আদালত। তৃণমূলের ব্রিগেডের দিন সন্দেশখালিতে সভা করতে চেয়েছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা।
শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্য কে সিঙ্গেল বেঞ্চ জানায়, ‘এই মিটিং করতে না দিয়ে আপনারা কাকে রক্ষা করতে চাইছেন? ওখানে কোনও গোলমাল না থাকায় সেখানে কোনও ১৪৪ ধারা ছিল না। কিন্তু মামলা করার আগেই সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।কেন ১৪৪ ধারা জারি করা হচ্ছে? কেনই বা মিটিংয়ে আপত্তি জানানো হচ্ছে?’
রাজ্যের তরফে যথাযথ জবাব না পেয়ে এরপরই বিরোধী দলনেতাকে আগামী ১০ মার্চ সন্দেশখালিতে সভা করার অনুমতি দেয় আদালত। আদালতে জানিয়েছে, ‘সভা থেকে কোনও কটুক্তি বা কুরুচিকর মন্তব্য করা যাবে না। সভার জেরে এলাকায় যেন কোনও অশান্তির পরিবেশ তৈরি না হয়। আগামী ১০ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সভা করতে পারবে বিজেপি’।
উল্লেখ্য, ওই একই দিনে কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের ওই সমাবেশের নাম দেওয়া হয়েছে জনগর্জন সভা।সন্দেশখালি অশান্ত হয়ে ওঠার পর দু’বার সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু পুলিশ তাঁকে ঢুকতে দেয়নি। শেষ পর্যন্ত গত মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারীকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ‘শুভেন্দু এবং শঙ্কর ঘোষ সন্দেশখালি যেতে পারবেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে কোনও নেতা-কর্মী যেতে পারবেন না’। হাইকোর্টের নির্দেশের পর সেদিন সন্দেশখালি ঢোকেন শুভেন্দু। দীর্ঘক্ষণ তিনি গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং বলে আসেন, ফের তিনি সন্দেশখালি আসবেন। এরপরই ১০ মার্চ সন্দেশখালির পাশে সুন্দরখালিতে সভা করতে চেয়ে পুলিশের কাছে আর্জি জানায় বিজেপি। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা। তাঁর আইনজীবী এদিন আদালতে বলেন, “পুলিশ পরিকল্পিতভাবে বাধা তৈরি করছে। ইচ্ছাকৃতভাবে সভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করে রাখা হচ্ছে।” তবে এদিন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিল।