পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ফের একবার মিঞা মুসলিমদের নিশানা করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এবার থেকে হিন্দিভাষীদেরও অসমিয় হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। অসমিয় কারা? তার যে সংজ্ঞা রয়েছে তার মধ্যে হিন্দিভাষীদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, হিমন্ত সবকিছুর মধ্যেই মেরুকরণ খোঁজেন। বাংলা মূলের অভিবাসী (বাঙালি মুসলিম) যারা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অসমে বসবাস করে আসছে তাদের নিশানা করা হচ্ছে। অথচ, সেখানে হিন্দিভাষীদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে। আসলে অসমের মতো রাজ্যেও জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
শনিবার হিমন্ত বলেন, অসমিয়া সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে পরিবর্তিত হয়েছে। এতে অবশ্যই এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যারা বহু শতাধী ধরে অসমে বসবাস করছেন, যেমন হিন্দি ভাষাভাষী এবং চা-উপজাতি। প্রকৃত অসমিয়াদের বোঝানোর জন্য একটি গণআন্দোলন প্রয়োজন যে- এই সম্প্রদায়ের পরিচয় ‘কোয়ালিটি’র মাধ্যমে ধরে রাখতে হবে। এদিন একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন হিমন্ত। সেই অনুষ্ঠানে আলফার ৯৩৬জন কর্মী এবং পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়।
সেখানে হিমন্ত আরও বলেন, অসমে জনবিন্যাসের পরিবর্তন হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও নীতির কারণে নয়, বরং বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের কারণে। আদমশুমারির রিপোর্ট এলেই দেখা যাবে, রাজ্যে প্রকৃত অসমিয়দের সংখ্যা মোট জনসংক্যার মাত্র ৪০ শতাংশে গিয়ে ঠেকবে। এরপরই হিমন্ত বলেন,‘অসমিয় সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে পরিবর্তিত হয়েছে। এতে অবশ্যই চা উপজাতি এবং হিন্দি ভাষাভাষীদের মতো সম্প্রদায়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যারা এখানে এক শতাব্দীর সময় ধরে বসবাস করছে।
এখন আমরা যদি এই সম্প্রদায়গুলিকে বা উপজাতীয় সম্প্রদায়গুলিকে অসমিয়ার সংজ্ঞার বাইরে রাখি তবে রাজ্যে প্রকৃত অসমিয়দের উপস্থিতি মাত্র ২৮-৩০ শতাংশ হবে। এভাবে যদি রাজ্যে অসমিয়াদের সংখ্যা কমতে পারে তাহলে তাদের পরিচয় একদিন মুছে যাবে। এটা আটকাতে অসমিয়াদের একত্রিত হতে হবে। আর এজন্য একটি গণআন্দোলনের প্রয়োজন যাতে আমরা জনগণকে বোঝাতে পারি যে আমাদের সংখ্যা না থাকলেও গুণমানের সাথে আমরা আমাদের অসমিয়া পরিচয়কে বাঁচিয়ে রাখতে পারি।
পাশাপাশি, মূল স্রোতে ফিরে আসার জন্য আলফা নেতৃত্ব এবং ক্যাডারদের প্রশংসা করে হিমন্ত বলেন, যারা এখনও সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের কাছেও আহ্বান করছি অস্ত্র ছেড়ে মূল স্রোতে ফিরে আসুন। রাজ্য সরকার ২,৩০০ নিহত আলফা সদস্যর পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার কথা ভাবছে।
হিমন্ত আরও বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন কারণে রাজ্য একাধিক হিংসার সাক্ষী থেকেছে। তা সে নাগা বা মিজো আন্দোলন হোক, বা অনুপ্রবেশ বিরোধী আন্দোলন বা ভাষা আন্দোলন-সংঘর্ষর ঘটনা ঘটেছে। রক্তাক্ত হয়েছে অসম। সমাধানের নামে আমরা কেবল আরও সমস্যা তৈরি করে চলেছি। তবে, গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যে শান্তির পরিবেশ ফিরতে শুরু করেছে।