জেনেভা, ২২ ফেব্রুয়ারি: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলের চালানো হামলায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি। আহতের সংখ্যা ৭০ হাজার পার। খাদ্যের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে গাজাবাসীকে। গাজার উত্তরাঞ্চলের মানুষদের কাছে পশুখাদ্য ছাড়া কোনও খাবার নেই। এমতাবস্থায় তীব্র মানবিক সংকটে থাকা গাজাকে ফের একবার ‘ডেথ জোন’ বা ‘মৃত্যুপুরী’ বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধান টেড্রস আধানম ঘেব্রিয়াসুস। ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে গাজায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি। ঘেব্রিয়াসুস বলেন, ‘গাজার মানবিক পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। গাজা এখন একটি মৃত্যুপুরী। সেখানকার বেশির ভাগ অঞ্চলই ধ্বংস হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘৩ দিন ধরে হু এবং এর সহযোগী সংস্থাগুলো দক্ষিণ গাজার আল-নাসের হাসপাতালে প্রবেশ করতে চাইছে। সেখানে শতাধিক আহত রোগী এবং কমপক্ষে ১৫ জন চিকিৎসক-নার্স রয়েছেন। হাসপাতালটির আইসিইউ কাজ করছে না। রোগীদের সরানো যাচ্ছে না।’ হু প্রধান তাঁর বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা কোন ধরনের পৃথিবীতে বাস করি, যেখানে মানুষ খাবার এবং পানি পায় না। বিকলাঙ্গ মানুষ সেবাযত্নও পায় না। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেরাই বোমা হামলার ঝুঁকিতে থাকেন।’ ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়ে হু প্রধান বলেন, ‘এসব হাসপাতালে একের পর এক হামলা করছে সামরিক বাহিনী। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দরকার। আমরা চাই জিম্মিরা মুক্তি পাক, বোমাবর্ষণ বন্ধ হোক।’ এদিকে, রাষ্ট্রসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ-এর কর্মকর্তা জোনাথন হুইটাল দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস শহরের নাসের হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হুইটাল বলেন, ‘নাসের হাসপাতালের পরিস্থিতি ভয়ানক। করিডোরে মৃতদেহ পড়ে আছে। রোগীরা অত্যন্ত খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। এটি আর নিরাময়ের কেন্দ্র নয়, বরং একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।’ হুইটাল জানান, তারা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে জ্বালানি, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের চেষ্টা করছেন। কিন্তু ইসরাইলি সেনার বাধার কারণে হাসপাতালে ঢুকে রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারেননি হুইটাল ও তার সহযোগীরা। ইসরাইলি সেনা এক সপ্তাহ ধরে নাসের হাসপাতালকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ও সেখানে আশ্রয় নেওয়া নিরীহ মানুষদের টার্গেট করে গুলি চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রাফায় পুরোদমে স্থল অভিযান শুরু করার ঘোষণা করেছে ইসরাইল।