পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট, ড্রোন আর কয়েক হাজার পুলিশ ব্যবহার করে কৃষক আন্দোলন দমাতে পারছে না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তাই কৃষকদের কন্ঠ রোধ করতে অন্য পথে হাঁটছে সরকার। সোশ্যাল মিডিয়ায় হু হু করে ছড়িয়ে যাচ্ছে কৃষক আন্দোলন সংক্রান্ত পোস্ট। পুলিশি নৃশংসতার ছবি পৌঁছে যাচ্ছে হরিয়ানা–পঞ্জাব থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে বসে থাকা দেশবাসীর কাছে। তাই এবার সোশ্যাল মিডিয়া সাইট এক্স কে ধমকাচ্ছে মোদি সরকার। ইলন মাস্কের কোম্পানি, এক্স এর গ্লোবাল গভর্নমেন্ট এফেয়ার্স টিম জানিয়েছে, কৃষক আন্দোলন সঙ্গে যুক্ত ১৭৭ টি এক্স একাউন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি মন্ত্রণালয়। এক্স জানিয়েছে, ওই ১৭৭ টি একাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করা ও কৃষক আন্দোলন সংক্রান্ত বেশ কিছু পোস্ট মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। তারা এও বলেছে যে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে মানুষের। অতএব কোনওভাবেই ওই একাউন্ট বা পোস্টগুলি সাসপেন্ড করা উচিত নয়। কিন্তু তারা সরকারের নির্দেশ মানতে বাধ্য। তাই একাউন্টগুলি সাময়িকভাবে বন্ধ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। পোস্টগুলিও মুছে ফেলতে হয়েছে তাদের।
কোম্পানির মতে, ভারত সরকারের আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একটি রিট আপিল দায়ের করেছে তারা। মাস্কের কোম্পানির মতে, আইনী সীমাবদ্ধতার কারণে সরকারের দেওয়া আদেশ তারা প্রকাশ করতে করতে পারছে না। কিন্তু স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য অমন আদেশ জনসমক্ষে আসা দরকার। নাহলে ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা থাকে। যে একাউন্টগুলি সাময়িকভাবে বন্ধ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের ব্যবহারকারীদের নোটিশও পাঠিয়েছে এক্স। সেখানে কারণ দর্শানো হয়েছে।
অমিত শাহ এর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুরোধেই এক্সকে নোটিশ ধরিয়েছে ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি মন্ত্রণালয়। তার কারণেই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে এক্স। কৃষক আন্দোলনে শপথ নেওয়া ১৪ হাজার আন্দোলনকারীকে রুখতে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকই। হরিয়ানা পুলিশকে আপাতত তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে এই আব্দার খাটেনি পঞ্জাব পুলিশের ক্ষেত্রে। পুলিশ দিয়ে না পেরে তাই এবার সোশ্যাল মিডিয়াতে জুলুম করছে সরকার।
এক্স জানে, তারা বাধ্য হয়ে যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা ভুল। কিন্তু তাদেরও হাত বাঁধা। যে দেশেই তারা ব্যবসা করে, সেদেশের সরকারের নির্দেশ মেনে নিতে বাধ্য তারা। গতবারের কৃষক আন্দোলন রুখতেও একই ধরণের বল প্রয়োগ করেছিল বিজেপি সরকার। এই তথ্য সামনে আসার পর গতবছর জুন মাসে ইলন মাস্ক বলেছিলেন, স্থানীয় আইন মেনে নেওয়া ছাড়া কোনও পথ নেই তাদের।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, শুধু এক্স নয়, আন্দোলন দমাতে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটকেও এধরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।