কিবরিয়া আনসারী: আধার-বিভ্রাটে আতঙ্ক মুর্শিদাবাদের রানিনগরে। এবার আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি পেয়ে মাথায় হাত রানিনগরের এক বাসিন্দার। গত কদিন আগে আঁধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি পেয়েছেন মালোতি বেওয়া। চিঠি পাঠানো হয়েছে রাঁচির আঁধার রিজিওনাল অফিস থেকে। ওই চিঠি পাবার পর ওই মহিলার পরিবারে নেমে এসেছে আতঙ্ক। রানিনগর থানার নরেন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা তিনি। প্রায় দশদিন আগে আঁধার কার্ড বাতিলের চিঠি পৌঁছেছে তাঁর বাড়িতে। চিঠি পাওয়ার পর থেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বছর পঞ্চান্নর স্বামীহারা বৃদ্ধা। আঁধার কার্ড ঠিক করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় হন্য হয়ে ঘুরেও ঠিক করতে পারেননি তিনি। কিভাবে আঁধার কার্ড চালু করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওই মহিলা। মালোতি বেওয়ার কথায়, ‘আমার আধার কার্ড হট করে বন্ধ হয়ে গেছে। এবার রেশন তুলতে পারছি না। ব্যাঙ্কের টাকা তুলতে গেছি, তুলতে পারছি না। খুব আতঙ্কে আছি।’
উল্লেখ্য, আধার নিষ্ক্রিয়তার ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আধার আইনের ২৮এ ধারায় সেই কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট আধার কার্ডের নাগরিকত্ব বা ঠিকানা নিয়ে সংশয় থাকার কারণে আধার নিষ্ক্রিয় হয়েছে। এই আবহে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাংলার বাসিন্দারা। অনেকেরই আবার অভিযোগ, আধার নিষ্ক্রিয়তার চিঠি পাওয়ার পর থেকে রেশন ও ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে।
মহিলার এক আত্মীয় জানান, আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে মালোতি বেওয়ার বিয়ে হয়েছিল লালগোলায়। কুড়ি বছর আগে তার স্বামী মারা যায়। ছেলে ও মেয়ে না থাকায় লালগোলা থেকে রানীনগরের নরেন্দ্রপুর এলাকায় বাবার বাড়িতে চলে আসেন। তারপর বাবা, মা দুজনেই মারা যাওয়ায় এখন ভাইয়ের বাড়িতে থাকেন তিনি।
রেশনের চাল ও ময়দার ওপর ভরসা করে অভাবের সংসার চলে ওই বৃদ্ধার। আঁধার কার্ডের ওপর ভরসা করে ব্যাঙ্কে টাকা পয়সা রাখতেন। পাশাপাশি আঁধার লিঙ্গের মাধ্যমে রেশন তুলতেন। কিন্তু আঁধার কার্ড আপডেট করা ছিল না দীর্ঘদিন। নিয়ম ভঙ্গের কারনেই আঁধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। মালোতি বেওয়া বলেন, “এই মাসে রেশন তুলতে পেরেছি। পরের মাসে রেশন বন্ধ হলে খাবো কি! ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকেও টাকা তোলা যাবে না।” এখন প্রশাসনের কাছে তাঁর আর্জি আঁধার কার্ডটি চালু করে দেওয়ার।