পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: চরম নৃশংসতা দেখাচ্ছে ইসরাইল। সাড়ে চার মাসে প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করার পর এবার তাদের অনাহারে ফেলে মারতে চায় তারা। নেতানিয়াহুর বাহিনী হাসপাতালগুলিকে গুঁড়িয়ে দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে। এবার খাদ্য সরবরাহে বাধা দিয়ে চরম নারকীয়তা দেখাচ্ছে তারা। মানবতার ইতিহাসে এমন নৃশংসতার নজির খুব কম দেখা গেছে। বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার অভাবে গাজার উত্তরাঞ্চলে খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। অঞ্চলটিতে ত্রাণের গাড়িবহরগুলো বিপর্যয় ও সহিংসতার মুখে পড়ায় ‘জীবন-রক্ষাকারী’ এই কর্মসূচি স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি। এ সিদ্ধান্ত খুব সহজেই নেওয়া হয়নি। সংস্থার সদস্যরা বন্দুকযুদ্ধ ও লুটপাটের সম্মুখীন হয়েছে। ইসরাইল চায়নি যে খাবার পৌঁছাক গাজাবাসীর কাছে।
গত ডিসেম্বর থেকেই গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথা জানিয়ে আসছে রাষ্ট্রসংঘ। গত অক্টোবরে স্থল অভিযান শুরু করার সময় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ১১ লাখ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের গাজার উত্তরাঞ্চলের সব এলাকা খালি করে দক্ষিণে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেয়। বেশির ভাগ বাসিন্দা ইসরাইলি আদেশ অনুসরণ করলেও কয়েক লাখ বাসিন্দা ওই অঞ্চল ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। ইসরাইলি সেনারা এই অঞ্চল ঘিরে ফেলায় এবং সেখানে হামাসের ঘাঁটিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কারণে অনেকে ওই অঞ্চল থেকে পালাতে পারেনি আর। উত্তর গাজায় রয়ে যাওয়া অন্তত ৩ লাখ মানুষ বেঁচে থাকার জন্য সংস্থাটির সহায়তার ওপর নির্ভর করছে। উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহ বেশ দুরূহ এবং ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ছাড়পত্রের ওপর নির্ভরশীল। এই সপ্তাহান্তে ডব্লিউএফপি আশা করেছিল যে, তারা এক সপ্তাহব্যাপী খাদ্য সরবরাহ শুরু করবে এবং ক্ষুধা নিবারণে সহায়তা করতে প্রতিদিন ১০টি লরি পাঠাবে।
কিন্তু গত রবিবার একটি গাড়িবহর গাজা শহরে প্রবেশের পর গাড়িবহরটি বিস্ফোরণের মুখোমুখি হয়। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস ও মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহ শহরের মধ্যে চলাচলকারী বেশ কয়েকটি লরিতে লুটপাট ও এক চালককে মারধরের ঘটনা ঘটে। ডব্লিউএফপি জানায়, গত দুই দিনে তাদের দল গাজা উপত্যকায় নজিরবিহীন হামলার সাক্ষী হয়েছে। খাদ্য ও নিরাপদ পানি অবিশ্বাস্যভাবে দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে এবং রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে। নারী ও শিশুদের পুষ্টি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাপকভাবে কমে এসেছে এবং এর কারণে তীব্র অপুষ্টি বেড়েই চলেছে।