পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: সময় গড়ানোর সঙ্গে জটিল হয়ে উঠছে মায়ানমারের পরিস্থিতি। দেশটির বিভিন্ন স্বাধীনতাকামী ও গণতন্ত্রপন্থী সশস্ত্র দলের সঙ্গে সীমান্তবর্তী প্রদেশে সামরিক জান্তা সরকারের লড়াই তুঙ্গে। গত তিন মাসে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা বাহিনী। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্য। রাখাইনে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তীব্র হামলার মুখে অনেক জায়গা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে সেনাবাহিনী। সম্প্রতি সামরিক বাহিনীর আরও বেশ কয়েকটি ঘাঁটি দখল করেছে বিদ্রোহীরা।
গত তিনদিনে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশনসের (ইএও) হামলায় ৬২ জন সেনা নিহত হয়েছে। দেশটির সাগায়িং, ম্যাগওয়ে ও মান্দালা অঞ্চলসহ কাচিন ও কারেন প্রদেশের বেশকিছু ঘাঁটি দখল করে জান্তার সেনাদের হত্যা করেছে বিদ্রোহী দলগুলি। রাখাইনে আবারও অভিযান শুরুর পর থেকে আরাকান আর্মি ১৬০টিরও বেশি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে, যার মধ্যে সিত্তওয়ের কাছে পাউকতাও শহর এবং চিন রাজ্যের পালেতওয়া টাউনশিপও রয়েছে।
এদিকে, রাখাইন রাজ্যে গুলি ও মর্টারের শব্দে প্রকম্পিত বাংলাদেশের তমব্রু সীমান্ত। আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াইয়ে মার খাচ্ছে জান্তা বাহিনী। অবস্থা এতটাই খারাপ যে, দিশেহারা হয়ে জান্তার প্রায় ১০০ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। সতর্ক অবস্থানে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীও। তবে সীমান্তে বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। শান প্রদেশেও বিপদে আছে জান্তা বাহিনী। বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে শান প্রদেশের বেশিরভাগ এলাকা।
ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে পরিচিত মায়ানমারের তিনটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী জান্তার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মরিয়া হয়ে উঠেছে জান্তা সরকার। উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহে মায়ানমারে তিন বছর পূর্ণ করল সেনাশাসন। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে রয়েছে জান্তা। গণতন্ত্রপন্থী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো একের পর এক অঞ্চল দখল করে ক্রমেই রাজধানীর দিকে এগোচ্ছে। এতে, যেকোনও সময় পতন হতে পারে স্বৈরশাসনের!