মোল্লা জসিমউদ্দিন: সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে নরেন্দ্রপুরে স্কুলে শিক্ষককে মারধরের মামলার শুনানি চলে। এদিন ফের আদালতে প্রশ্নের মুখে রাজ্য পুলিশ। এর আগের শুনানিতে হাইকোর্ট এর বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গেল বেঞ্চ প্রধান শিক্ষক-সহ এফআইআর-এ নাম থাকা সকল অভিযুক্ত অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিল।
তবে এদিনের শুনানিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, -‘প্রধান শিক্ষক ছাড়া এফআইআর কপিতে নাম থাকা বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে’। বিচারপতি এরপর জানান -‘ ‘ প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা যায়নি কেন?”
এর প্রত্যুত্তরে রাজ্য সরকার জানায়, ‘ -তিনি আগাম জামিনের আবেদন করেছেন।’ পাল্টা বিচারপতি জানান, ‘আগাম জামিনের আবেদন করলে কি গ্রেফতার করা যায় না?’ অপরদিকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে,- ‘প্রধান শিক্ষককে ৩০ শে জানুয়ারি সাসপেন্ড করা হয়েছে।’ এরপরে বিচারপতি বলেন, ‘আশা করি পুলিশ সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারবে।’ মাধ্যমিকের পরে ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে ।উল্লেখ্য গত শুক্রবার এই মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
এফআইআর কপিতে -এ নাম থাকা প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য-সহ সবাইকে গ্রেফতারের নির্দেশ বহাল রাখে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।নির্দেশনামায় ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ , ‘আইনের শাসন ভাঙার অধিকার কারও নেই। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর মুখে সিঙ্গল বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছে তা যথাযথ। সে ক্ষমতা সিঙ্গল বেঞ্চের আছে।’ উল্লেখ্য, নরেন্দ্রপুরের বলরামপুর মন্মথনাথ বিদ্যামন্দিরে সম্প্রতি শিক্ষকদের মারধর, নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। প্রহৃত শিক্ষক শিক্ষিকারা জানান, -‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সামনে আসে।’
অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক প্রভাব খাটিয়ে সেই অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর সে কারণের স্কুল চলাকালীন বহিরাগতদের ক্লাসে ঢুকিয়ে শিক্ষকদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
এই মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। দ্রুত সকল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চে তাঁদের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।এরেই মধ্যে সিঙ্গেল বেঞ্চে এদিন এই মামলার শুনানি চলে। সেখানে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়।