পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: দিল্লির মেহরুলিতে মসজিদ ভাঙার মামলা হাইকোর্টে পৌঁছলেও কিন্তু জনআক্রোশ কমছে না। স্থানীয় মুসলিমরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় সংগঠনগুলির প্রতি যারা এত বড় অবিচার দেখেও চুপ করে রয়েছেন। যদিও, এই মসজিদ ভাঙার মামলা দিল্লি হাইকোর্টে পৌঁছেছে। হাইকোর্ট দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির কাছে জানতে চেয়েছে, ৬০০ বছরের পুরনো এই ঐতিহাসিক মসজিদ ও তার সঙ্গে থাকা মাদ্রাসা ভাঙা হল কেন? বুলডোজার চালানোর আগে ডিডিএ কোনও নোটিশ দিয়েছিল কি না।
ভাঙা মসজিদের জায়গা দেখার জন্য দলে দলে মানুষ মেহরুলিতে আসছেন। ডিডিএ-র এই বেআইনি কাজের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন সবাই। বিশেষ করে মসজিদ-মাদ্রাসায় থাকা কুরআন শরীফের অবমাননা নিয়ে সরব হচ্ছেন সব ধর্মের মানুষ। উল্লেখ্য, ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগেই বুলডোজার চলে আসে মেহরুলির মসজিদে। অল্প সময়ের মধ্যেই ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয় ৬০০ বছরের মসজিদ। এলাকায় মসজিদে আখুনজি নামে পরিচিত ছিল এটি। এর পাশে ছিল মাদ্রাসা বাহারুল উলুম। মসজিদের ইমাম জাকির হুসেনের বয়ান অনুযায়ী, সেদিন ২২ জন ছাত্র ছিল মাদ্রাসায়। তাদের বইপত্র, কাপড়, বাক্স সব বিনষ্ট করা হয়েছে। রাতের অন্ধকারেই ভাঙা মসজিদের টুকরো সাফ করে দেওয়া হয়।
দিল্লির সেন্ট্রাল রিফর্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নাসিমুল হক কাসেমি জানান, এই বুলডোজার চালানো সম্পূর্ণ বেআইনি ও রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত কাজ। সামাজিক কর্মকর্তা হাজি আকরাম হুসেন ও সৈয়দ কামরুদ্দিন জানান, তারা দোষী অফিসারদের শাস্তির দাবি করবে কোর্টে। দিল্লিতে ওয়াকফ সম্পত্তি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির নিরাপত্তা দাবি করে বিবৃতি প্রকাশ করে তারা বলেন, যদি এই ঘটনার প্রতিবাদ না হয় তাহলে দিল্লিতে শুধু মুসলিমদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও এভাবে বুলডোজার চলবে। তাই সকলে মিলে প্রতিবাদ জানাবার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। কোনও রাজনৈতিক দল মেহরুলিতে প্রতিবাদ জানাতে এগিয়ে আসেনি সেজন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। আইনি লড়াই চালাবার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি শচিন দত্ত মেহরুলির এই মসজিদ ভাঙা নিয়ে ডিডিএ-র জবাব চেয়েছেন সাতদিনের মধ্যে। সকলেরই প্রশ্ন, ৬০০ বছরের মসজিদ কীভাবে কোন আইনে জবরদখলে অভিযুক্ত হতে পারে।