মোল্লা জসিমউদ্দিন: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে উঠে নরেন্দ্রপুর স্কুলে হামলা সংক্রান্ত মামলা।নরেন্দ্রপুরকাণ্ডে প্রধান শিক্ষকসহ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারির যে নির্দেশ দিয়েছিলেন সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসু, তাতে কোনও হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, -‘এই আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে মনে করছে না এই বেঞ্চ’।
এরপর ডিভিশন বেঞ্চ জানায় -‘স্কুলে ঢুকে শিক্ষকদের মারধর ও শিক্ষিকাদের শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্তদের কেন রক্ষাকবচ দেবে আদালত?’ নরেন্দ্রপুরে স্কুলে ঢুকে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই স্কুলের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ইমতেয়াজ আহমেদ সহ স্কুলের পরিচালন সমিতির কয়েকজন সদস্য। দাখিল মামলায় তাঁরা জানিয়েছেন , -‘যে মামলার ভিত্তিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু অভিযুক্তদের গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়েছেন তাতে প্রধান শিক্ষক ইমতেয়াজ আহমেদ নিজের বক্তব্য রাখার সুযোগ পেলেও বাকিরা পাননি।’ তবে ডিভিশন বেঞ্চে এই বক্তব্য কে মান্যতা দেয়নি। ডিভিশন বেঞ্চ এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, -‘ স্কুলে ঢুকে শিক্ষকদের মারধর ও শিক্ষিকাদের শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
এরা শিক্ষাব্যবস্থাকে নষ্ট করছে। এই ধরণের অভিযুক্তদের কেন রক্ষাকবচ দেবে আদালত। সিঙ্গল বেঞ্চ সঠিক পদক্ষেপ করেছে। এই মামলার কোনও গ্রহণযোগ্যতা খুঁজে পাচ্ছে না আদালত’।গত সপ্তাহে নরেন্দ্রপুরের বলরামপুর মন্মথনাথ বিদ্যামন্দিরে প্রধান শিক্ষক ইমতেয়াজ আহমেদের মদতে এক স্থানীয় নেতার নেতৃত্বে গুন্ডারা ঢুকে শিক্ষক – শিক্ষিকাদের মারধর করে বলে অভিযোগ। ব্যাপক মারধর করা হয় শিক্ষক – শিক্ষিকাদের। শিক্ষিকাদের চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় সেই ঘটনার ভিডিয়ো।
হামলাকারীদের দাবি, -‘ স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর যৌন নিগ্রহের অভিযোগ রয়েছে’। পালটা আক্রান্ত শিক্ষকদের দাবি, -‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করায় তাঁদের আক্রান্ত হতে হয়েছে’। এই মর্মে প্রধান শিক্ষক ছাড়াও ৩ স্থানীয় নেতার নামে নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত শিক্ষকরা।এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। সেই মামলায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়েছিলেন সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি স্থানীয় থানার পুলিশ। এর পর মাধ্যমিক শুরুর আগে অভিযুক্তদেরক ধরতে নির্দেশ দেয় সিঙ্গেল বেঞ্চ।
আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ফের মামলাটির শুনানি রয়েছে । এই ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্যা ৮ জন। শুক্রবার নরেন্দ্রপুর নিয়ে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর কোনও হস্তক্ষেপ করল না ডিভিশন বেঞ্চ। উল্টে ডিভিশন বেঞ্চ জানায় , ‘এরা শিক্ষাব্যবস্থা নষ্ট করছে।’ সিঙ্গল বেঞ্চের গ্রেফতারির নির্দেশ বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ।