এস জে আব্বাস, পূর্ব বর্ধমান: এক গুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস ও নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বুধবার পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বর্ধমান কোর্ট চত্বরে প্রশাসনিক ভবন, মেডিকেল কলেজে আক্সিজেন মেনিফোল্ড ইউনিট, ইউরোলোজি মেশিন স্থাপন, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল ভবন, নলবাহী পানীয় জল সরবরাহ সহ আরও বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। শিলান্যাস করা হয়েছে বর্ধমান আরামবাগ রাস্তা (রাজ্যসড়ক-৭) প্রসারীকরণ এবং দৃটীকরণ, নতুন হোস্টেল ভবনের নির্মাণ, বিদ্যালয়ে সায়েন্স ল্যাব, লাইব্রেরি নির্মাণ, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার বিল্ডিং নির্মাণ, ইডেন খালের উপর (চাঁচাই গ্রামে) একটি ব্রিজ নির্মাণ, দাঁইহাটে ২ টি অগ্নিনির্বাপন কেন্দ্র স্থাপন প্রভৃতি। এছাড়াও, এদিনের সভা থেকে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ উপভোক্তাকে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।
এদিনের মঞ্চ থেকে কেন্দ্র সরকারকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজ্য থেকে আমাদের জিএসটি-র টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ একশ দিনের সাত হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়নি। গরিব মানুষের মুখের ভাত মারছে। সবেতেই জিএসটি, রেস্টুরেন্টে খেতে যাবেন জিএসটি ট্যাক্স। শাড়ি কিনতে যাবেন জিএসটি ট্যাক্স। পরে দেখবেন নুকুল দানা কিনতে যাবেন সেখানেও জিএসটি। জিএসটির ফলে মূল্যবৃদ্ধি এবং ছোটছোট দোকান দারদের অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
রাজ্যের প্রাপ্য পাওয়া দেওয়া হচ্ছে না বলেও সরব হত মমতা। তিনি বলেন, জিএসটি-র একটা অংশ রাজ্যের পাওনা। সেটা আমাদের দেওয়া না। আমাকে বলছে টাকা দেব না। আমি বললাম কেন? ওরা বলছে, সব জায়গায় গেরুয়া রং করতে হবে। আমি বললাম, আপনারা তো সাধু নন! নেতাজির জন্ম-জয়ন্তীতে জাতীয় ছুটির প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ ধর্মের নামে ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে। আমার আপত্তি নেই। আর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দেশের জন্য জীবন দিয়ে গেল আজও জানতে পারলাম না তার মৃত্যু দিবস কবে? তার দিনটা জাতীয় দিবস হল না! লজ্জা! লজ্জা! লজ্জা!
তাছাড়া বাংলা ও বাংলার মনীষীদেরকে অসম্মানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, স্বামী বিবেকানন্দকে গালাগালি দিচ্ছ, বিদ্যাসাগরকে অসম্মান করছ, বাংলার সবাইকে অসম্মান করছ, বাংলার সংস্কৃতিকে অসম্মান করছ, বাংলার সভ্যতাকে অসম্মান করছ। জেনে রেখো, বাংলা না থাকলে স্বাধীনতা আন্দোলনটাই সফল হত না। সবচেয়ে বেশি বাংলার অবদান আছে দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে। বাবা সাহেব আম্বেদকর প্রথম সংসদে গিয়েছিল বাংলা থেকে। এটা বাংলার অবদান। আমার গর্ব। বাংলার মাটি সভ্যতার মাটি, সংস্কৃতির মাটি, সোনার চেয়ে খাঁটি।
এদিন পূর্ব বর্ধমানের গোদার মাঠে প্রশাসনিক সভাও করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকা সহ অন্যান্য আধিকারিক এবং রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মলয় ঘটক, স্বপন দেবনাথ, প্রদীপ মজুমদার, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, পূর্ব-বর্ধমান জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি, পুলিশ সুপার আমনদীপ সহ পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ।