বেইরুট, ১৭ জানুয়ারি: যুদ্ধপরিস্থিতি বিরাজ করছে ইসরাইল-লেবানন সীমান্তে। মঙ্গলবার দক্ষিণ লেবাননের ওয়াদি সালুকি এলাকায় হিজবুল্লাহর বিভিন্ন ঘাঁটিতে ব্যাপক বিমান থেকে বোমা বর্ষণ ও কামানের গোলা নিক্ষেপ করে ইসরাইলি সেনা। এর জবাবে একই দিনে উত্তর ইসরাইলে এক ইহুদি সেনাঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা।
সূত্রের খবর, আগামীতে ইসরাইলি সেনারা দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযান চালানোরও প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ লক্ষ্যে লেবানন সীমান্তে মোতায়েন ইসরাইলি সেনারা ব্যাপক মহড়া চালাচ্ছে। গাজায় হামলার পর থেকেই লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় ইসরাইলের। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলি সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি বিনিময় চলছে। দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে স্থল অভিযান চালাতেই মূলত ইসরাইল সেনারা সীমান্তজুড়ে ব্যাপক মহড়া শুরু করেছে।
ইসরাইলি বাহিনীর স্পেশাল ফোর্স এরই মধ্যে লেবানন সীমান্ত অতিক্রম করে একটি স্থল অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু লেবানন-ভিত্তিক টিভি ওই খবরের সত্যতা অস্বীকার করেছে। ইসরাইলি সেনার উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডার ওরি গর্ডিন জানিয়েছেন, লেবানন সীমান্তে অন্তত ২০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। একটি ভিডিয়োতে গর্ডিনকে ইসরাইলি সেনাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়। তবে হিজবুল্লাহ তার আগের অবস্থানেই টিকে আছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, গণহত্যা না বন্ধ হলে ইসরাইলে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা হামলা চালিয়ে যাবে। এর আগে হিজবুল্লাহর হামলার জেরে উত্তর ইসরাইলের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে অসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় তেল আবিব।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৬ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল। তারও আগে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। দীর্ঘ ৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে যায়নবাদী ইসরাইলের বর্বর হামলায় এখনও পর্যন্ত ২৪ হাজার ২৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গাজায় ইসরাইলের চালানো গণহত্যার প্রতিবাদে মধ্যপ্রাচ্যের বহু সশস্ত্র সংগঠন ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ইয়েমেন থেকে আনসারুল্লাহ বাহিনী (হুথি), গাজার হামাস, আল-কাসসাম ব্রিগেড, ইসলামিক জেহাদ ও লেবাননের হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার এই যুদ্ধে যোগ দিয়েছে। এমতাবস্থায় এই যুদ্ধ সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।