ইনামুল হক, বারাসত: শুরু হলো বারাসতের ঐতিহ্যবাহী কাজীপাড়ার পীর একদিল শাহ রহ. এঁর মেলা। মঙ্গলবার এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বারাসতের পুরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায়।
এদিন সন্ধ্যায় কাজীপাড়া হযরত একদিল শাহ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, এত বড় এই প্রাচীন মেলা যে মানুষটিকে কেন্দ্র করে সেই পীর হযরত একদিল শাহ যে একজন বড় মাপের মানুষ ছিলেন যাঁর স্মরণে প্রতি বছর যে এত মানুষের সমাগম ঘটে এই মেলায় তা থেকেই অনুমান করা যায়। ৫০০ থেকে ৬০০ বছরের পুরনো এই মেলার মূল বার্তা- সম্প্রীতির মেল বন্ধন। আজকের দিনে যেটা খুবই কার্যকরী ও জরুরি।
মেলা কমিটির সভাপতি রতন কুমার দাস জানান,লোকমুখে প্রচলিত এই মেলা ৮০০ বছরেরও বেশি পুরনো। তবে ইতিহাস থেকে জানা যায় খাজা মইনুদ্দিন চিশতী রহ. এঁর সহচর হিসেবে সুদূর পারস্য থেকে ভারতবর্ষের ২৪ পরগনার অন্যতম আনোয়ারপুর পরগনার কাজীপাড়ায় এসেছিলেন পীর হযরত একদিল শাহ রহ.। তিনি তাঁর অলৌকিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাতি,ধর্ম , নির্বিশেষে মানুষের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন। কেবল ধর্ম প্রচারের জন্য নয়, তিনি মানব ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি মানুষের জন্য অনেক কাজ করেছিলেন।
তাই তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে চিরস্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে চালু হয় হযরত একদিল শাহ রহ. মেলা। মেলা কমিটির কর্মকর্তা কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল আহমেদ, ইসলাম আলি, মোহাম্মদ সেলিম কুরেশি, ইমতিয়াজ আলি, আলি আকরাম, মোহাম্মদ কাসেম মোল্লা, বদর ওয়াসীম, মোহাম্মদ সাবির আলী, মানোয়ার হোসেনরা প্রতিবছরের মত এ বছরেও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত হাজার হাজার মানুষের ভিড় সামলে সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে মেলা পরিচালনা করছেন।
এদিন মেলা ঘুরে দেখেন পুরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায় ছাড়াও উপ পুর প্রধান তাপস দাশগুপ্ত, পৌর পারিষদ অরুণ ভৌমিক, চম্পক কুমার দাস,সৌমেন আচার্য, ডা .বিবর্তন সাহা, ডা. সুমিত সাহা প্রমুখরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বারাসাত ১ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর প্রতিনিধি মারিয়াম মাসুদ কাজী, সমাজসেবী কাজী মাসুদ আলম, প্রতিনিধি স্বপ্না বসু প্রমুখ।
স্হানীয় বাসিন্দা ও সমাজসেবী কাজী মাসুদ আলম বলেন, এই মেলা কেবল ইতিহাস বহন করে চলেছে তাই নয়, মেলাকে কেন্দ্র করে বারাসাতের কাজীপাড়া একটি সম্প্রীতির পীঠস্থান হিসেবে গড়ে উঠেছে। বলাবাহুল্য, এই মেলায় রকমারি পণ্য সামগ্রী থেকে খাদ্য সামগ্রীর ব্যবসা ও ছোটদের মনোরঞ্জনের জন্য নাগরদোলা থেকে শুরু করে সমস্ত রকমের আনন্দ- আয়োজনে অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হয় বহু মানুষ। সরকারিভাবেও ১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত এই মেলা এলাকার উন্নয়নও চোখে পড়ার মতো। মেলা এক সপ্তাহ ধরে চলবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।